মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়

 প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৩:৫৪ অপরাহ্ন   |   মোবাইল , টিপস ও গাইড

মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়

মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়

বর্তমান যুগে যোগাযোগ, ব্যাংকিং এমনকি সংবেদনশীল তথ্য অ্যাক্সেসের জন্য আমরা স্মার্টফোন  ব্যবহার করি। হ্যাকিং শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত, অনেক সময় আমাদের ভুলের কারণে আমাদের স্মার্ট ফোনটি হ্যাক হয়ে যায় অথবা হ্যাকাররা হ্যাক করে নেয়। মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, নিয়মিত ফোন সফ্টওয়্যার আপডেট করা, পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকা, সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং একটি মোবাইল নিরাপত্তা অ্যাপ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।


ব্যবহৃত মোবাইলের দাম জানতে এখানে ক্লিক করুন


বর্তমান সময়ের প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে কিন্তু সবাই কি জানে কাঙ্ক্ষিত মোবাইল ফোনটি কিভাবে ব্যবহার করতে হয়? বিশেষ করে হ্যাকিং থেকে নিজের ফোনটিকে কিভাবে রক্ষা করতে হয়? আমাদের মধ্যে কম বেশী সবাই জানে যে, হ্যাক বলতে কিছু রয়েছে এবং হ্যাকিং এর মাধ্যমে খুব সহজেই একটি মোবাইল বা কম্পিউটার থেকে অতি সহজেই তথ্য চুরি করে নেয়া যায় সেই সাথে সেই ডিভাইসকে একেবারে নষ্ট করে দেয়া যায়। দেখুন মোবাইল হোক বা কম্পিউটার হোক সেটি যদি ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত করা থাকে হ্যাকার অতি সহজেই সেই ডিভাইসকে হ্যাক করে ফেলতে পারে। তাই হতে পারে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি হ্যাকিং এর ঝুঁকিতে রয়েছে! কিন্তু আপনি চাইলেই আপনার ডিভাইসটিকে অতি সহজেই হ্যাকারদের কাছে থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারবেন। 

তাই আজ এই আর্টিকেলে হ্যাকিং নিয়ে এবং মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় যা কিছু জানার আছে সমস্ত কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করবো সেই সাথে কীভাবে মোবাইল হ্যাকিং থেকে বাঁচা যায় সব কিছুই ধাপে ধাপে বলে দেয়াড় চেষ্টা করবো। শুধু তাই নয় স্বয়ং হ্যাকারদের দেয়া কিছু তথ্য আপনাকে বলে দেয়া হবে কারণ তারা নিজেই বলে দিয়েছে কীভাবে একজন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী হ্যাকারদের কাছে থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে।

মোবাইল হ্যাকিং কি?

হ্যাকিং হচ্ছে এমন এক মাধ্যমে যেখানে একটি কম্পিউটার বা মোবাইলের দুর্বলতা খুঁজে বের কর সেই ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি করে নেয়ার একটি মাধ্যম। বিশেষ করে আমাদের ব্যবহার করা ডিভাইসগুলোর অ্যাপ এবং সফটওয়্যার এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামে ব্যবহার করে তৈরি করা হয়ে থাকে। আর হ্যাকিং করার জন্য সেই কম্পিউটার প্রোগ্রাম ব্যবহার করে এক ধরনের অ্যাপ অথবা সফটওয়্যার তৈরি করা হয়ে থাকে। সেই তৈরি করা অ্যাপগুলোকে ইন্টারনেট মাধ্যম ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর ফোনে প্রবেশ করিয়ে দেয়া হয়ে থাকে। যখন সেই অ্যাপ একটি মোবাইলে প্রবেশ করে তখনই সেই হ্যাকার চাইলেই অতি সহজেই সেই ডিভাইস থেকে যেকোনো তথ্য চুরি করে নিতে পারে। এক কথায় ,কোন একটি ডিভাইসের দুর্বলতা খুঁজে বের করে সেই কম্পিউটারে ক্ষতিকর প্রোগ্রাম প্রবেশ করিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চুরি করার মাধ্যমকে বোঝানো হয়ে থাকে। অনেকের ধারণা যে, হ্যাকিং শুধু মানুষের ক্ষতি করার জন্য করা হয়ে থাকে কিন্তু এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল কারণ অনেক কোম্পানি বা এজেন্সি রয়েছে যারা তাদের নিজেদের সাইবার নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য এথিক্যাল হ্যাকারদের হায়ার করে থাকে।

পৃথিবীতে তিন ধরনের হ্যাকার রয়েছে নিচে এদের বর্ণনা দেওয়া হলো 

আজকের বিশ্বে সাধারণত তিন ধরনের হ্যাকার আছে ব্ল্যাক হ্যাট হ্যাকার, হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার এবং গ্রে হ্যাট হ্যাকার। যদিও হ্যাকাররা প্রায়ই কম্পিউটার, সিস্টেম বা নেটওয়ার্কে অননুমোদিত অ্যাক্সেস পেতে দুর্বলতাকে কাজে লাগানোর সাথে যুক্ত থাকে, তবে সব হ্যাকিং দূষিত বা অবৈধ নয়। হ্যাঁ, অনেক ধরনের হ্যাকার আছে, এবং অনেক হ্যাকিং ক্রিয়াকলাপ দরকারী কারণ তারা প্রোগ্রামিং দুর্বলতা উন্মোচন করে যা বিকাশকারীদের সফ্টওয়্যার পণ্য উন্নত করতে সহায়তা করে।

মোবাইল হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়

১.হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার

২.গ্রে হ্যাট হ্যাকার

৩.ব্লাক হ্যাট হ্যাকার

-এই তিন ধরনের হ্যাকারের মধ্যে যারা হোয়াইট হ্যাট হ্যাকার রয়েছেন তারা কোনোভাবেই মানুষের ক্ষতি করেন। তারা শুধু মানুষের উপকার করে থাকে। বিভিন্ন কিছুই সিকিউরিটি দিয়ে থাকে।

-গ্রে হ্যাট হ্যাকার হচ্ছে মাঝা মাঝি অবস্থানের হ্যাকার কারণ তারা চাইলে মানুষের ক্ষতি করতে পারে আবার উপকার করতে পারে। প্রয়োজন অনুযায়ী তারা হ্যাকিং করে থাকে।

-আর যারা ব্লাক হ্যাট হ্যাকার রয়েছেন তারা শুধু মানুষের ক্ষতি করা ছাড়া কিছুই করেন। তারা সব সময় চিন্তা করে থাকে কীভাবে মানুষের ক্ষতি করা যেতে পারে। আমরা আমাদের মোবাইল ফোনকে এই ব্লাক হ্যাট হ্যাকার থেকেই রক্ষা করা শিখবো।কারণ এই হ্যাকাররা মূলত আমাদের স্মার্ট ফোনটি হ্যাক করে থাকে।


কত ধরণের হ্যাকিং রয়েছে?

হ্যাকিং এর বিভিন্ন ধরণ রয়েছে কারণ ভিন্ন ভিন্ন ডিভাইস ভিন্ন উপায়ে হ্যাক হয়ে থাকে। তাই সাধারণ অর্থে বলা হয় মোবাইল হ্যাকিং হোক বা কম্পিউটার হ্যাকিং হোক সেটি ব্যাসিক ৭ উপায়ে হতে থাকে যেমন,

অ্যান্ড্রয়েড ফোন হ্যাকার থেকে সুরক্ষিত রাখার উপায়

১। ওয়েবসাইট হ্যাকিং

এটি এমন এক হ্যাকিং মাধ্যম যেখানে শুধু ওয়েবসাইটকে টার্গেট করে হ্যাকিং করা হয়ে থাকে। আর ওয়েবসাইট বলতে গুগল,youtube  ফেসবুক রয়েছে সেগুলোকেই বোঝানো হয়ে থাকে। যে সমস্ত হ্যাকার ওয়েবসাইট হ্যাক করে তারা একটি ওয়েবসাইটের দুর্বলতা খুঁজে বের করে এবং সেই ওয়েবসাইটের লগইন ইনফরমেশন খুঁজে বের করে আর যখন তারা সমস্ত তথ্য নিয়ে নেয় তখন সেই ওয়েবসাইটের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। তারা চাইলে সেই ওয়েবসাইটের বিনিময়ে মালিকের কাছে থেকে ভালো অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিতে পারে নতুবা সেই ওয়েবসাইট অন্য কারো কাছে বিক্রি করে টাকা কামিয়ে নিতে পারে। 

২। ছবি-মেইল হ্যাকিং

আমাদের মধ্যে এমন কেও নেই যে ই -মেইল ব্যবহার করেন। আর ই-মেইল আপনাকে  ব্যবহার করতেই হবে কারণ ফোনে ই-মেইল লগইন করা না থাকলে সেই ফোন দিয়ে কোন প্রকার অ্যাপ ডাউনলোড করা যায় না। আর এরই সুযোগ নিয়ে কিছু হ্যাকাররা নিয়ে থাকে। বিশেষ করে তথ্য আদান-প্রদান, ইউটিউব চ্যানেল তৈরি, গুগল থেকে মনিটাইজেশন  সমস্ত কিছুই ই-মেইল ব্যবহার করে করা হয়ে থাকে। আর এই ই-মেইল যদি হ্যাক হয়ে যায় তাহলে সেই ই-মেইলে থাকা সমস্ত কিছুই হ্যাকারদের কাছে চলে যায়। যদি একবার আপনার ই-মেইল হ্যাক হয়ে যায় আপনি শতবার চাইলেও সেই ই-মেইল এক্সেস করতে পারবেন না।

৩। মোবাইল হ্যাকিং

বর্তমান সময়ের একটি আলোচিত বিষয় হচ্ছে মোবাইল হ্যাকিং কারণ বর্তমান সময়ের কম বেশী সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকে। আর তার সুযোগ নিয়ে হ্যাকার মোবাইল এগুলোকে হ্যাক করে সেই মোবাইলে থাকা সমস্ত তথ্য চুরি করে নেয় ও মোবাইল ব্যবহারকারীর সাথে প্রতারণা শুরু করে।

৪। কম্পিউটার হ্যাকিং

কম্পিউটারের অপারেটিং সিস্টেমকে হ্যাক করে সেই কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ডেটা চুরি এবং কম্পিউটারের সমস্ত নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়াই হচ্ছে কম্পিউটার হ্যাকিং। এটি করার জন্য হ্যাকার যে কম্পিউটারকে হ্যাক করবে সেটির দুর্বলতা খুঁজে বের করে তারপর সেই কম্পিউটারে কোন এক মাধ্যমে হ্যাকিং প্রোগ্রাম প্রবেশ করিয়ে দেয়। আর যখন হ্যাকিং প্রোগ্রাম কম্পিউটারে প্রবেশ করে তখন সেই কম্পিউটারে থাকা সমস্ত ডেটা হ্যাকার ব্যবহার করতে পারে।

৫। পাসওয়ার্ড হ্যাকিং

বিশেষ কিছু টুলস বা ফিশিং লিঙ্ক ব্যবহার করার মাধ্যমে কোন একটি সিস্টেম বা মাধ্যমের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে নিজের আয়ত্তে নিয়ে নেয়াই হচ্ছে পাসওয়ার্ড হ্যাকিং। এই মাধ্যমে হ্যাকার কোন একজনের ই-মেইল, ফেসবুক, মোবাইল, ওয়াইফাই বা কোন এক মাধ্যমের পাসওয়ার্ড হ্যাক করে পুরটাই নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয়। হ্যাকিং এর এত পরিমাণ মাধ্যম রয়েছে যে বলে শেষ করা যাবেনা। শুধু মাত্র এই কয়েকটি বিষয় অবলম্বন করে বর্তমান আইডি হ্যাক হয়ে থাকে।

কিভাবে বুঝবেন আপনার ফোনটি হ্যাক হয়েছে?

হ্যাকিং থেকে বাঁচার উপায়

আজকাল প্রায় সকলের হাতেই রয়েছে একটি স্মার্টফোন। গত এক দশকে এই ডিভাইস আমাদের জীবনের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এই বিপুল জনপ্রিয়তার কারণেই হ্যাকারদেরও এখন একমাত্র লক্ষ্য হয়ে উঠেছে, যেন তেন প্রকারে স্মার্টফোন হ্যাক করা। অনেকেই মনে করেন, শুধু জনপ্রিয় ব্যক্তিদের ফোন হ্যাক করা হয়। কিন্তু, আসলে তা নয়। যে কোনও ব্যক্তির স্মার্টফোন হ্যাক হতে পারে। নিয়মিত হাজার হাজার সাধারণ মানুষের স্মার্টফোন হ্যাক হচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ফোন  হ্যাক হওয়ার পরেও অনেকে তা না বুঝে ফোন ব্যবহার চালিয়ে যান, যা সত্যিই বিপজ্জনক। অনেকে আবার বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাওয়ার পরেই বুঝতে পারেন, যে তাঁদের ফোন হ্যাক হয়েছিল। স্মার্টফোন হ্যাক হলে ডিভাইসের মধ্যে থাকা সব তথ্য হ্যাকারের হাতে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেকেই এই ভাবে আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে থাকেন। এমনকি হ্যাকাররা বাড়ি বসে আপনার ফোনের ক্যামেরা ব্যবহার করে আপনি কী করছেন, কোথায় যাচ্ছেন, কার সঙ্গে দেখা করছেন, তা-ও দেখে নিতে পারে। যে কোনও স্মার্টফোন হ্যাক হলে, তা বোঝার কিছু উপায় রয়েছে।


স্মার্টফোন হ্যাক হলে ফোনে কী কী লক্ষণ দেখা যাবে?

অত্যধিক ব্যাটারি খরচ

স্মার্টফোনে হঠাৎ দ্রুত ব্যাটারি শেষ হয়ে যাচ্ছে? ফোনের ব্যাটারির ক্ষমতা নিয়মিত কমলে তা ধীরে ধীরেই কমতে থাকে। এক ধাক্কায় ফোনের ব্যাটারি ব্যাক আপ কমে গেলে, আপনার ফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। হ্যাকাররা ব্যাকগ্রাউন্ডে অনেক অ্যাপ চালাতে থাকে, এই কারণে কমে যেতে পারে ফোনের ব্যাটারি ব্যাক আপ।

ফোন স্লো হয়ে যাওয়া

কোনও কারণ ছাড়াই হঠাৎ আপনার ফোন স্লো হয়ে গেলেও স্মার্টফোন হ্যাকিং হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় এই কারণে ওয়েব পেজ ঠিক মতো লোড হয় না, অথবা বার বার ফোন রিস্টার্ট হতে শুরু করে। অনেক সময় আবার হ্যাকাররা ব্যাকগ্রাউন্ডে ক্রিপ্টোকারেন্সি মাইনিংও চালাতে থাকে, যা আপনার প্রসেসরকে ব্যস্ত রাখে।

অজানা বিজ্ঞাপন

অনেক হ্যাকাররা  আপনার ফোনে বিজ্ঞাপন দেখিয়ে রোজগারের উপায় খুঁজে নেন। এই কারণে আপনার ফোন হ্যাক হওয়ার কারণে বারবার ফোনে বিজ্ঞাপন দেখানো শুরু হয়। এমনকি নোটিফিকেশনে অথবা ফুল স্ক্রিনে বিজ্ঞাপন দেখানো হয় অনেক সময়। হঠাৎ ফোনে এই রকম সমস্যা দেখা গেলে বুঝবেন, আপনার ফোনে অ্যাডওয়্যার অ্যাটাক হয়েছে। এটিও এক ধরনের হ্যাকিং।

ফোনে অজানা অ্যাপের উপস্থিতি

হঠাৎ আপনার ফোনে যদি এমন কোনও অ্যাপ দেখতে পান, যেটা আপনি ইনস্টল করেননি, তবে আপনার ফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

ডেটা ব্যবহার বৃদ্ধি

আপনি ফোনে কিছু না করলেও যদি হঠাৎ আপনার ফোনে মাত্রাতিরিক্ত হারে ডেটা ব্যবহৃত হয়, তাহলেও ফোন হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। অনেক সময় আপনার ফোন থেকে ডেটা নিজের সিস্টেমে নেওয়ার জন্য, আপনার ফোনের ডেটা ব্যবহার করে হ্যাকাররা। এই কারণে হঠাৎ ডেটা ব্যবহার বেড়ে গেলে বুঝবেন, আপনার ফোনে হ্যাকিং অ্যাটাক হয়ে থাকতে পারে।


স্মার্টফোন হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচার উপায়

আমাদের আজকের এই উপায় গুলো অনুসরণ করে আপনি নিজের মোবাইলে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ডেটা এগুলোকে সম্পূর্ণ নিরাপদ করে রাখতে সক্ষম হবেন ,এবং মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় খুঁজে পাবেন ।

কিভাবে বুঝব মোবাইল হ্যাক হয়েছে

১. একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড

আপনি যখন একটি অনেক সাধারণ (যেমন আপনার নাম বা জন্মের তারিখ) পাসওয়ার্ড সেট করবেন, সেটা হ্যাকাররা সহজেই crack করার সম্ভাবনা থাকছে।

তাই, নিজের মোবাইলে এমন একটি password বা PIN সেট করুন যেটার অনুমান করা কঠিন। আপনার মোবাইলের security password গুলো যত অধিক শক্তিশালী থাকবে আপনার মোবাইল ততটাই অধিক নিরাপদ হবে।আমরা ফেসবুক বলি অন্য কোন সোশ্যাল মিডিয়া বলি সেটি ব্যবহার করার সময় প্রতিটি আক্যাউন্টে পাসওয়ার্ড ব্যবহার করতে হয়। তাছাড়াও ফোন লক, কম্পিউটার লক সমস্ত কিছুতে ব্যবহার করি পাসওয়ার্ড। আর এই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করার ক্ষেত্রেই সব চেয়ে বেশী সমস্যার তৈরি হয় কারণ নিজেদের সুবিধার জন্য এমন কিছু নাম্বার বা নাম ব্যবহার করি। যেটি চাইলেই হ্যাকার খুব সহজেই ট্রাকিং করতে পারে এবং সেই লক বদলে নিজের মত করে ব্যবহার করতে পারে। তাই আপনার সব সময় উচিত হবে কমন কোনো পাসওয়ার্ড ব্যবহার না করা। যেমন নিজের মোবাইল নাম্বার, নিজের নাম, জন্ম তারিখ বা প্রিয় কোন মানুষের নাম বা অক্ষর ,আপনাকে এমন একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করতে হবে যে সেই পাসওয়ার্ড যেন হ্যাকার কোন ভাবেই ডিকোড করতে না পারে। কম্পিউটার শুধু ০ এবং ১ এই দুটি নাম্বারকে চিনে থাকে। তাই কঠিন পাস কোড ব্যবহার করলে সেট ডিকোড করা অনেক কঠিন ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। যেমন হতে পারে qW@5&6?%! এমন কিছু। আপনি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করতে ডেলি না ডট কম ব্যবহার করতে পারেন।

২. সফটওয়্যার আপডেট

নিয়মিত ভাবে নিজের মোবাইলের সিস্টেম সফটওয়্যারটি আপডেট করার বিষয়টিতে নজর দিতে হবে। নিয়মিত সফটওয়্যার আপডেট আপনার মোবাইলে নিরাপত্তা নিয়ে থাকা দুর্বলতাগুলোকে দূর করতে সাহায্য করে। নিজের ফোনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে মোবাইল operating system এবং apps গুলো আপডেটেড রাখাটা জরুরি। আপনার মোবাইলে কোনো ধরনের software updates-এর notification চলে আসবে, সেটাকে সাথে সাথে install করুন। এতে, হ্যাকাররা সহজে  আপনার মোবাইল হ্যাক করতে পারবেন না।

৩. Public Wi-Fi:

কোনো পাসওয়ার্ড ছাড়া ওপেন WIFI connection থাকলেই, আমরা সরাসরি সেই নেটওয়ার্ক এর সাথে নিজের মোবাইল সংযুক্ত করতে একবারও ভাবি না।তবে আপনি কি জানেন, হ্যাকারদের জন্যে এই ধরনের Public Wi-Fi networks গুলো মোবাইল ও ল্যাপটপ হ্যাকিং এর জন্য একটি সেরা মাধ্যম তাই, যেকোনো অচেনা অজানা জায়গাতে থাকা Public Wi-Fi networks গুলো ব্যবহার করেননি। আর যদি কোনো কারণবশত ব্যবহার করতে হয়, তাহলে ভুলেও অনলাইন ব্যাংকিং বা অনলাইনে কেনাকাটা করবেন না। Open public Wi-Fi networks গুলো ব্যবহারের আরেকটি ঝুঁকি (risk) হলো,আপনি অনলাইনে করা প্রত্যেক কাজগুলো গুলো হ্যাকাররা দেখতে পাবেন। তাই, Open public Wi-Fi ব্যবহার করতে হলেও CyberGhost বা TunnelBear এর মতো VPN পরিষেবাগুলো অবশ্যই ব্যবহার করুন,এতে আপনার online activities গুলো hackers-রা  ট্র্যাক করতে পারবেন না।

৪. মোবাইল এন্টিভাইরাস অ্যাপ

একটি ভালো ও কার্যকর mobile antivirus software-এর দ্বারা আপনি নিজের মোবাইলকে ক্ষতিকারক সফটওয়্যার ও সম্ভাব্য সাইবার হামলা এগুলোর থেকে রক্ষা করতে পারবেন। মোবাইল এন্টিভাইরাস গুলো আপনার মোবাইলে real-time scanning-এর মাধ্যমে ভাইরাস ও সাইবার আক্রমণ গুলো শনাক্ত করার কাজ করে থাকে। তাই, হ্যাকারদের দ্বারা করা বেশিরভাগ সাইবার হামলাগুলোর থেকে নিজের মোবাইলকে নিরাপদ রাখার জন্যে এই এন্টিভাইরাস গুলো অবশ্যই ব্যবহার করুন। Google Play Store-এর মধ্যে গিয়ে আপনারা ভালো ভালো ও জনপ্রিয় mobile antivirus apps গুলো মোবাইলে ফ্রিতে download করে ব্যবহার করতে পারবেন।মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচতে আপনার ফোন এ এন্টি ভাইরাস এপপ্স ইনস্টল রাখুন ।

৬. অ্যাপ লক করুন

WhatsApp, Facebook, Google photos, File manager, banking app ইত্যাদি এই ধরনের app গুলো অবশ্যই lock করে রাখুন। মোবাইলে থাকা individual apps lock করার ক্ষেত্রে আপনারা Google Play Store-এ AVG AntiVirus-এর মতো প্রচুর সফটওয়্যার পেয়ে যাবেন।

৭. সন্দেহজনক ই-মেইল এবং লিঙ্ক

বর্তমান সময়ে হ্যাকার দের মোবাইল হ্যাক করার আরেকটি অধিক ব্যবহৃত উপায় রয়েছে, সেটা হলো “ই-মেইল এর দ্বারা”.এই ধরনের উপায় এগুলোকে বলা হয় “Phishing scams”, আপনার ই-মেইল আইডিতে ই-মেইল পাঠিয়ে ম্যালওয়্যার ডাউনলোড করা বা সংবেদনশীল তথ্য গুলো চুরি করার চেষ্টা করেন হ্যাকাররা।আপনার মোবাইলে সরাসরি চলে আসা সন্দেহজনক ইমেইলগুলো কখনো ওপেন করবেন না। কেননা, এই ধরনের সন্দেহজনক ই-মেইল এগুলোর মধ্যে এমন কিছু লিংক (link) থাকতে পারে যেগুলো ক্লিক করার সাথে সাথে আপনার মোবাইল হ্যাক হতে পারে।

৮. Root এবং jailbreak

আজকাল প্রায় প্রত্যেকেই নিজের মোবাইল ফোন রুট করতে ইচ্ছুক। মোবাইল রুট করার সুবিধা অবশ্যই আছে, এটা আমিও মানছি, তবে মোবাইল রুট করার মাধ্যমে আপনি হ্যাকার দের সুবিধা করে দিচ্ছেন। Rooting এবং jailbreaking-এর ফলে আপনার মোবাইলের ওয়ারেন্টি বাতিল অবশ্যই হয়ে যাবে। এছাড়া, একটি root হওয়া মোবাইল হ্যাকাররা তুলনামূলক ভাবে অধিক সহজে হ্যাক করতে পারেন। তাই, নিজের android mobile রুট করবেন না যদি আপনি নিজের স্মার্টফোনকে হ্যাক হওয়া থেকে রক্ষা করতে চান।

৯. Bluetooth

মোবাইল হ্যাক হওয়া থেকে বাঁচার জন্যে আপনাকে নিজের মোবাইলের bluetooth-এর ওপরে অবশ্যই নজর দিতে হবে।  ব্লুটুথ এর দ্বারা একটি মোবাইল হ্যাক করাটা তেমন সুবিধাজনক  না হলেও হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা অবশ্যই থাকছে। যখন আপনার দরকার হবে আপনি ব্লুটুথ চালু করে ব্যবহার করতে পারবেন, তবে ব্যবহার করা হয়ে গেলে সাথে সাথে অফ করতে হবে। এটা করেও আপনি হ্যাকারদের আপনার ফোন অ্যাক্সেস করতে বাধা দিতে পারবেন।

(all image)

হ্যাকাররা মোবাইল ফোন হ্যাক করে কি করে?

১.হ্যাকার মোবাইল ফোন হ্যাক করে ফোনে থাকা ছবি, ফাইল, ভিডিও, অডিও সমস্ত কিছু চুরি করে নেয় আর এই বিনিময়ে ব্লাকমেইল করে থাকে বা তথ্য বিক্রি করে দেয়।

২.ফোনে থাকা সমস্ত ই-মেইল ও এসএমএস পড়তে পারে তাই সহজেই ফেসবুক বা অন্য যেকোনো অ্যাকাউন্ট সহজেই হ্যাক করে ফেলতে পারে।

৩.ফোন থেকে সহজেই কন্টাক্টে থাকা নাম্বারে মেসেজ পাঠাতে পারে ও কাছের মানুষের কাছে থেকে টাকা হাতিয়ে নিতে পারে।

৪.ফোনের লাইভ লোকেশন ট্রাকিং করতে পারে ফলে আপনি কোথায় আছেন সেটি সহজেই জানতে পারে।

৫.ফোনে থাকা ক্যামেরা ব্যবহার করে অতি সহজেই সমস্ত কিছু রেকর্ডিং করে নিতে পারে।

৬.কন্টাক্টে থাকা সমস্ত নাম্বার কপি করে নিতে পারে এবং পরবর্তীতে আপনার নাম দিয়ে জালিয়াতি করতে পারে। বিভিন্ন ক্রাইম করতে পারে ।

আর যখন হ্যাকারের কাজ শেষ হয়ে যায় তখন ফোনে থাকা ম্যালওয়্যার ডিলিট করে দেয় এবং ফোনের মালিক কিছুই বুঝতে পারেনা। তাই মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় গুলো আপনাকে স্টেপ বাই স্টেপ ফলো করতে হবে।


ফোন হ্যাক হলে কি করবেন?

আপনার ফোনে এমন কিছু দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ফোন রিফ্রেশ করুন। ফোনটি রিবুট বা ফরম্যাট করার চেষ্টা করুন। ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত সমস্ত ই-মেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।

  

হ্যাক হওয়া আইডি কীভাবে ঠিক করবেন?

হ্যাকিং কিভাবে প্রতিরোধ করা যায়


যদি আপনার ফোন হ্যাক হয়ে থাকে, তাহলে মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায়  প্রথমে আপনার ফোনের Settings-এ যান। এরপর Manage Apps-এ ট্যাপ করুন। এখানে আপনি সমস্ত অ্যাপের একটি তালিকা পাবেন। সব অ্যাপস চেক করুন। আপনি যদি এমন কোনও অ্যাপ দেখতে পান, যা ফোনে আগে কখনও দেখেননি। তবে সেটিকে তখনই আনইন্সটল করুন। এছাড়াও আপনার ফোনের Settings-এ গিয়ে Google-এ ট্যাপ করুন। তারপর Security-তে গিয়ে Google Play Protect-এ ট্যাপ করুন। এখানে আপনি সমস্ত স্পাই অ্যাপের (Spy Apps) তালিকা পাবেন। আপনাকে একে একে সব আনইন্সটল করতে হবে। কিন্তু যদি দেখেন No Problems Found লেখা, তাহলে তার মানে সব অ্যাপই নিরাপদ আছে।


সচরাচর জিজ্ঞাসাবলী 

মোবাইল হ্যাকিং কি?

উত্তর: হ্যাকিং হচ্ছে এমন এক মাধ্যমে যেখানে একটি কম্পিউটার বা মোবাইলের দুর্বলতা খুঁজে বের কর সেই ডিভাইস থেকে তথ্য চুরি করে নেয়ার একটি মাধ্যম। বিশেষ করে আমাদের ব্যবহার করা ডিভাইসগুলোর অ্যাপ এবং সফটওয়্যার এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রামে ব্যবহার করে তৈরি করা হয়ে থাকে।


মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় কি?

উত্তর: হ্যাকিং শব্দটির সাথে আমরা অনেকেই পরিচিত ,অনেক সময় আমাদের ভুলের কারণে আমাদের স্মার্ট ফোনটি  হ্যাক হয়ে যায় অথবা হ্যাকাররা হ্যাক করে নেয় । মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার উপায় শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা, নিয়মিত ফোন সফ্টওয়্যার আপডেট করা, পাবলিক ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্ক ব্যবহার করার সময় সতর্ক থাকা, সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং কৌশল সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং একটি মোবাইল নিরাপত্তা অ্যাপ ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।


ফোন হ্যাক হলে কি করবেন?

উত্তর: আপনার ফোনে এমন কিছু দেখতে পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই মোবাইল হ্যাক থেকে বাঁচার জন্য   ফোন রিফ্রেশ করুন। ফোনটি রিবুট বা ফরম্যাট করার চেষ্টা করুন। ফোনের সঙ্গে সংযুক্ত সমস্ত ই-মেইলের পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন।