ফেঞ্চুগঞ্জ এর ডেস্কটপ কম্পিউটারস
বিজ্ঞাপন ফিল্টার করুন
কোন ফলাফল পাওয়া যায়নি!
ডেস্কটপ কম্পিউটারের দাম ২০২৫ – সম্পূর্ণ গাইড
ডেস্কটপ কম্পিউটার এখনো বাংলাদেশের বাজারে সবচেয়ে জনপ্রিয় ডিভাইসগুলোর একটি। গেমিং, অফিসের কাজ, গ্রাফিক্স ডিজাইন কিংবা শিক্ষার জন্য নির্ভরযোগ্য কম্পিউটার খুঁজলে ডেস্কটপের মতো আর কিছু নেই। ২০২৫ সালে ডেস্কটপ কম্পিউটারের দাম ভিন্ন ভিন্ন ব্র্যান্ড, কনফিগারেশন এবং ব্যবহার অনুযায়ী পরিবর্তন হচ্ছে। অনেকেই জানতে চান কোন কনফিগারেশনের ডেস্কটপ কিনলে ভালো হবে বা কোথায় সাশ্রয়ী দামে পাওয়া যায়। এই গাইডে আমি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরছি ডেস্কটপ কম্পিউটারের দাম ২০২৫, ব্র্যান্ডভেদে দাম, নতুন বনাম ব্যবহৃত ডেস্কটপের পার্থক্য, আর কোথায় সবচেয়ে কম দামে কেনা সম্ভব। আশা করি এটি আপনার জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ গাইড হবে।
বাংলাদেশে ডেস্কটপ কম্পিউটারের বর্তমান বাজার দর
২০২৫ সালে বাংলাদেশের কম্পিউটার মার্কেট অনেক বেশি প্রতিযোগিতামূলক হয়েছে। বড় বড় শহরে যেমন ঢাকার কম্পিউটার মার্কেট বা চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে প্রতিদিনই নতুন মডেলের ডেস্কটপ আসে। এন্ট্রি লেভেল থেকে হাই-এন্ড পর্যন্ত বিভিন্ন বাজেটে কম্পিউটার পাওয়া যাচ্ছে। অনলাইন শপ, ফিজিক্যাল স্টোর এবং ব্র্যান্ডেড আউটলেট—সব জায়গায় দামের পার্থক্য দেখা যায়। বিশেষ করে মৌসুমী ডিসকাউন্ট, ফেস্টিভাল সেল বা নতুন বছর উপলক্ষে প্রচারাভিযানে অনেক সাশ্রয়ী দাম পাওয়া যায়।
সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য ৩৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার মধ্যে একটি এন্ট্রি লেভেল ডেস্কটপ যথেষ্ট। তবে যারা গেমিং, ভিডিও এডিটিং বা গ্রাফিক্সের মতো কাজ করেন, তাদের জন্য ৭০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকার মিড-রেঞ্জ বা তারও বেশি মূল্যের ডেস্কটপ উপযুক্ত। হাই-এন্ড কনফিগারেশনগুলো মূলত পেশাদার গেমার, কনটেন্ট ক্রিয়েটর বা আর্কিটেক্টদের জন্য। বাজারের এই বৈচিত্র্যের কারণে আমি সবসময় অনলাইন তুলনামূলক দাম দেখি এবং বিশ্বস্ত দোকান থেকে ক্রয় করি।
ডেস্কটপ কম্পিউটারের দাম কিসের উপর নির্ভর করে?
ডেস্কটপ কম্পিউটারের দামের ক্ষেত্রে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করে। প্রথমত, প্রসেসরের জেনারেশন এবং মডেল দাম বাড়ানো বা কমানোর প্রধান চালক। দ্বিতীয়ত, গ্রাফিক্স কার্ডের ধরনও গুরুত্বপূর্ণ—ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স সাধারণ অফিস কাজের জন্য যথেষ্ট হলেও, গেমিং বা হাই-এন্ড কাজের জন্য আলাদা GPU দরকার হয়। এছাড়াও RAM এবং স্টোরেজ ক্যাপাসিটি দামের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। SSD ব্যবহার করলে দাম কিছুটা বেশি হলেও পারফরম্যান্স অনেক উন্নত হয়।
এছাড়াও ব্র্যান্ড এবং সার্ভিস ওয়ারেন্টির ওপরও দাম নির্ভর করে। HP, Dell, Lenovo-এর মতো ব্র্যান্ড সাধারণত দাম কিছুটা বেশি রাখে, তবে তারা দীর্ঘমেয়াদি সাপোর্ট দিয়ে থাকে। অন্যদিকে লোকাল বিল্ড সিস্টেমগুলো তুলনামূলকভাবে সস্তা হলেও ঝুঁকি কিছুটা বেশি থাকে। আমি যখন কম্পিউটার কিনি, তখন প্রসেসর, GPU, RAM, SSD, PSU—সব উপাদানের মান যাচাই করি। এতে বাজেট ঠিক রাখার পাশাপাশি টেকসই কনফিগারেশন নিশ্চিত করা যায়।
নতুন বনাম ব্যবহৃত ডেস্কটপ কম্পিউটারের দামের পার্থক্য
নতুন ডেস্কটপ কম্পিউটার কেনার সুবিধা হলো একেবারে নতুন যন্ত্রাংশ, অফিসিয়াল ওয়ারেন্টি এবং দীর্ঘমেয়াদি নির্ভরযোগ্যতা। তবে এর জন্য আপনাকে বেশি টাকা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে, ব্যবহৃত ডেস্কটপ কেনার মাধ্যমে আপনি ২০ থেকে ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাজেট বাঁচাতে পারেন। তবে ব্যবহৃত কম্পিউটার কেনার আগে কিছু বিষয় অবশ্যই চেক করা উচিত।
আমি যখন ব্যবহৃত কম্পিউটার বিবেচনা করি, তখন HDD/SSD এর হেলথ, প্রসেসরের পারফরম্যান্স, পাওয়ার সাপ্লাই, কুলিং সিস্টেম এবং ওয়ারেন্টি কার্ড দেখি। অনেক সময় কিছু বিক্রেতা রিপেয়ার করা বা রিফার্বিশড পণ্য বিক্রি করে, তাই সতর্ক থাকা দরকার। নতুন বনাম ব্যবহৃত ডেস্কটপের এই পার্থক্যগুলো জানলে আপনি বাজেট অনুযায়ী সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।
ব্র্যান্ডভেদে ডেস্কটপ কম্পিউটারের দাম (HP, Dell, Lenovo, Asus)
ব্র্যান্ডেড ডেস্কটপ সাধারণত বেশি নির্ভরযোগ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহার উপযোগী হয়। HP, Dell, Lenovo এবং Asus প্রতিটি ব্র্যান্ডের আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। HP সাধারণত অফিস ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত, Dell ব্যবসায়িক গ্রাহকদের জন্য জনপ্রিয়, Lenovo এর কমপ্যাক্ট ডিজাইন অনেকের পছন্দ, আর Asus মূলত গেমিং ও হাই-এন্ড পারফরম্যান্সের জন্য খ্যাত।
আমি লক্ষ্য করেছি যে, একই স্পেসিফিকেশনের ডেস্কটপ ভিন্ন ব্র্যান্ডে ১০ থেকে ২০ শতাংশ পর্যন্ত দামের পার্থক্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, একটি Core i5, 16GB RAM এবং GTX 1650 GPU সমৃদ্ধ সিস্টেম HP-তে যেখানে ৮৫ হাজার টাকা হতে পারে, Dell-এ সেটি ৯০ হাজার এবং Lenovo-তে প্রায় ৮০ হাজার টাকা হতে পারে। তাই ব্র্যান্ড বাছাইয়ের সময় আপনার প্রয়োজন এবং বাজেট মিলিয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।
কোন কনফিগারেশনের ডেস্কটপ আপনার জন্য সেরা হবে?
সঠিক কনফিগারেশন বাছাই করার সময় প্রথমে আপনার কাজের ধরন নির্ধারণ করা জরুরি। যদি শুধুমাত্র অফিসের সাধারণ কাজ যেমন Word, Excel, ব্রাউজিং বা অনলাইন ক্লাস হয়, তাহলে i3 বা Ryzen 3 প্রসেসর, 8GB RAM এবং 256GB SSD যথেষ্ট। তবে আপনি যদি গ্রাফিক্স ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং বা প্রোগ্রামিং করেন, তাহলে অবশ্যই i5 বা Ryzen 5 প্রসেসর, 16GB RAM এবং একটি মিড-রেঞ্জ গ্রাফিক্স কার্ড প্রয়োজন হবে।
গেমিং এর জন্য আমি সাধারণত i5/Ryzen 5 প্রসেসর, 16GB বা তার বেশি RAM এবং RTX 3060 বা তার উপরের GPU সাজেস্ট করি। যারা ভবিষ্যতে আপগ্রেড করতে চান, তারা অবশ্যই DDR5 সমর্থিত মাদারবোর্ড এবং শক্তিশালী পাওয়ার সাপ্লাই নেবেন। এতে ৩ থেকে ৫ বছর পর্যন্ত আপগ্রেডের ঝামেলা ছাড়াই ব্যবহার করা সম্ভব হবে।
গ্রাফিক্স ডিজাইন, গেমিং ও অফিস কাজের জন্য আলাদা দামের ডেস্কটপ
ডেস্কটপের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে ব্যবহারকারীর উদ্দেশ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অফিস কাজের জন্য সাধারণত ৩৫ থেকে ৫০ হাজার টাকার একটি ডেস্কটপ যথেষ্ট। এতে ইন্টিগ্রেটেড গ্রাফিক্স, 8GB RAM এবং একটি SSD থাকলেই স্বাচ্ছন্দ্যে অফিস অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায়।
গ্রাফিক্স ডিজাইনারদের জন্য মিড-রেঞ্জ ডেস্কটপ প্রয়োজন যেখানে 16GB RAM, একটি মিড-লেভেল GPU এবং বড় SSD বা HDD থাকতে হবে। অন্যদিকে গেমারদের জন্য শক্তিশালী GPU, উচ্চ ক্ষমতার কুলিং সিস্টেম এবং হাই-রিফ্রেশ রেট মনিটর জরুরি। তাই প্রত্যেক ধরনের কাজের জন্য আলাদা দামের ডেস্কটপ নির্ধারণ করা হয়।
অনলাইনে কোথায় সবচেয়ে সস্তায় ডেস্কটপ কম্পিউটার পাওয়া যায়?
অনলাইনে সস্তায় ডেস্কটপ কিনতে চাইলে প্রথমে বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে তুলনা করা উচিত। বাংলাদেশে Daraz, Startech, Ryans, Global Brand এবং অবশ্যই Aponhut-এ প্রায়শই দামের পার্থক্য দেখা যায়। অনেক সময় অনলাইন কুপন, ফ্ল্যাশ সেল বা EMI সুবিধার কারণে দাম আরও কমে যায়।
আমি যখন ডেস্কটপ কিনি, তখন সবসময় অন্তত তিনটি ওয়েবসাইটে দাম তুলনা করি। এছাড়াও আমি বিক্রেতার রেপুটেশন, কাস্টমার রিভিউ এবং রিটার্ন পলিসি যাচাই করি। Aponhut-এ অনেক সময় এক্সক্লুসিভ অফার পাওয়া যায় যা অন্য কোথাও নেই। তাই আমি সবসময় Aponhut-কে অগ্রাধিকার দিই।
কিস্তিতে ডেস্কটপ কম্পিউটার কেনার সুবিধা
ডেস্কটপ কেনার সময় একসাথে বড় অঙ্কের টাকা খরচ করা অনেকের জন্য কষ্টকর হতে পারে। এ ক্ষেত্রে EMI বা কিস্তি সুবিধা অত্যন্ত কার্যকর। বাংলাদেশে এখন বেশিরভাগ দোকান এবং অনলাইন শপ EMI অফার করে থাকে। এর ফলে ০% ইন্টারেস্ট EMI সুবিধায় সহজে একটি ভালো ডেস্কটপ কেনা সম্ভব।
আমি সাধারণত EMI নেওয়ার আগে চেক করি ব্যাংক কোন কোন কাগজপত্র চাইছে, প্রসেসিং ফি কত এবং মোট খরচ কত হবে। কখনও কখনও EMI-তে হিডেন চার্জ থাকে যা পরে সমস্যা তৈরি করে। তাই কেনার আগে সমস্ত শর্ত ভালোভাবে পড়া উচিত। EMI ব্যবহারে আপনি বাজেট নিয়ন্ত্রণে রেখে একটি ভালো ডেস্কটপ কিনতে পারবেন।
ডেস্কটপ বনাম ল্যাপটপ – দামের দিক থেকে কোনটি সাশ্রয়ী
ডেস্কটপ এবং ল্যাপটপের মধ্যে দামের পার্থক্য সবসময় আলোচনার বিষয়। পারফরম্যান্সের দিক থেকে ডেস্কটপ তুলনামূলকভাবে কম দামে বেশি শক্তিশালী হয়। একই কনফিগারেশনের ল্যাপটপ কিনতে হলে প্রায় দ্বিগুণ খরচ করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, i5 প্রসেসর, 16GB RAM এবং GTX 1650 GPU সমৃদ্ধ একটি ডেস্কটপ যেখানে ৮০ হাজার টাকায় পাওয়া যায়, একই স্পেসিফিকেশনের ল্যাপটপ প্রায় ১.৪ লাখ টাকার মতো।
তবে ল্যাপটপের সুবিধা হলো এর বহনযোগ্যতা। যারা বারবার ভ্রমণ করেন বা মোবাইল অফিস করতে চান, তাদের জন্য ল্যাপটপ অপরিহার্য। আমি যদি স্থায়ীভাবে বাড়ি বা অফিসে কাজ করি, তবে অবশ্যই ডেস্কটপকে বেছে নেবো। কিন্তু বারবার বাইরে কাজ করতে হলে ল্যাপটপই শ্রেয়।
কেন Aponhut থেকে ডেস্কটপ কম্পিউটার কিনবেন?
Aponhut বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত কম্পিউটার বিক্রেতা। এখানে সব ধরনের ব্র্যান্ডেড এবং কাস্টম বিল্ড ডেস্কটপ পাওয়া যায়। Aponhut সবসময় জেনুইন পার্টস সরবরাহ করে এবং প্রতিটি পণ্যের সাথে ওয়ারেন্টি প্রদান করে। EMI সুবিধা, ক্যাশ-ব্যাক এবং মৌসুমী অফারের কারণে অনেকেই এখানে কেনাকাটা করে।
আমি ব্যক্তিগতভাবে Aponhut থেকে কেনাকাটা করেছি এবং খুবই ভালো অভিজ্ঞতা পেয়েছি। তাদের সার্ভিস দ্রুত, পণ্যের মান ভালো এবং কাস্টমার সাপোর্ট সবসময় রেসপন্সিভ। যারা ডেস্কটপ কিনতে চান, তাদের জন্য Aponhut একটি আদর্শ জায়গা।
ডেস্কটপ কম্পিউটার কেনার আগে সাধারণ কিছু টিপস
ডেস্কটপ কেনার আগে আমি সবসময় কিছু বিষয় মাথায় রাখি। প্রথমত, ভবিষ্যতে আপগ্রেডের সুযোগ থাকবে কিনা সেটি যাচাই করি। দ্বিতীয়ত, পাওয়ার সাপ্লাই এবং কেসিং এর মান যাচাই করি। তৃতীয়ত, মনিটর এবং অন্যান্য পেরিফেরাল গিয়ারও সমান গুরুত্বপূর্ণ।
এছাড়াও আমি সর্বদা বিল পেপার, সিরিয়াল নাম্বার এবং ওয়ারেন্টি কার্ড চেক করি। উইন্ডোজ বা লিনাক্স লাইসেন্স আছে কিনা সেটিও যাচাই করি। এইসব টিপস অনুসরণ করলে দীর্ঘমেয়াদি এবং টেকসই ডেস্কটপ কেনা সম্ভব হয়।