গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম জানুন বাংলাদেশে – সহজ গাইড

 প্রকাশ: ০৬ অগাস্ট ২০২৫, ০৯:০০ পূর্বাহ্ন   |   গাড়ি , টিপস ও গাইড

গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম জানুন বাংলাদেশে – সহজ গাইড

গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম জানার উপায় বাংলাদেশে

বাংলাদেশে কখনো কি এমন হয়েছে যে একটি অচেনা গাড়ি আপনার সামনে দৌড়ে পালিয়েছে বা সন্দেহজনকভাবে আপনার এলাকা ঘুরছে, অথচ আপনি জানতে পারছেন না মালিক কে? চিন্তার কিছু নেই। এখন গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম জানার পদ্ধতি সহজ ও ডিজিটাল হয়েছে। আজকের এই আর্টিকেলে আমি আপনাকে ধাপে ধাপে দেখাবো কিভাবে আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে গাড়ির মালিক, রেজিস্ট্রেশন, ইন্স্যুরেন্স ও আরও অনেক তথ্য জানতে পারবেন – তা একেবারে ঘরে বসেই!

সূচিপত্র

গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিক খোঁজার কারণগুলো

"নিরাপত্তার জন্য গাড়ির মালিকের তথ্য জানা অনেক সময় জরুরি হয়ে পড়ে!"


গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিক খোঁজার অন্যতম প্রধান কারণ হলো ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তা। অনেক সময় আমাদের আশেপাশে অচেনা গাড়ি সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করে। তখন আমরা জানতে চাই, এই গাড়িটির মালিক কে? এমন পরিস্থিতিতে মালিকের নাম জানা থাকলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সহজ হয়।

ব্যবসায়িক দিক থেকেও এই তথ্য জানা জরুরি। পুরাতন গাড়ি কেনা-বেচার সময় গাড়িটির প্রকৃত মালিক কে, সেটা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। গাড়ির মালিকের নাম জানার উপায় জানা না থাকলে আপনি প্রতারণার শিকার হতে পারেন। অনেক সময় নকল কাগজ বা জাল ডকুমেন্ট দিয়ে গাড়ি বিক্রির চেষ্টা করা হয়।

আইনগত বা ট্রাফিক অপরাধের ক্ষেত্রেও এই তথ্য খুব কার্যকর। দুর্ঘটনার পরে পালিয়ে যাওয়া গাড়ির নাম্বার জানা থাকলে, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী মালিকের তথ্য অনুসন্ধান করে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে পারে। তাই ব্যক্তিগত সচেতনতার পাশাপাশি নাগরিক দায়িত্ব হিসেবেও গাড়ির মালিকানা যাচাই করা দরকার।

BRTA কি এবং কীভাবে কাজ করে?

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ বা BRTA (Bangladesh Road Transport Authority) হচ্ছে সরকারের অধীনে পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠান যা গাড়ি ও যানবাহন নিয়ন্ত্রনে প্রধান ভূমিকা রাখে। এই সংস্থাটি দেশের সকল গাড়ির রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।

BRTA-এর প্রধান কাজগুলোর মধ্যে রয়েছে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন প্রদান, মালিকানা হস্তান্তর, ফিটনেস সার্টিফিকেট প্রদান, ট্যাক্স ও ফি গ্রহণ এবং যানবাহন সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়ন। তারা গাড়ির যাবতীয় তথ্য একটি কেন্দ্রীয় ডাটাবেসে সংরক্ষণ করে থাকে। এই ডাটাবেজ থেকেই গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নামসহ অন্যান্য তথ্য জানা যায়।

বর্তমানে BRTA ডিজিটাল সিস্টেমে রূপান্তরিত হয়েছে। আপনি অনলাইনেও এই সংস্থার সেবা নিতে পারেন। BRTA.gov.bd ওয়েবসাইট এবং অ্যাপের মাধ্যমে আপনি এখন ঘরে বসেই গাড়ির মালিকানা যাচাই, ফিটনেস চেক ও অন্যান্য তথ্য জানতে পারবেন।

গাড়ির নাম্বার দিয়ে তথ্য জানার সরকারি উপায়

"অনলাইনে BRTA পোর্টাল থেকে আপনি ঘরে বসেই তথ্য জানতে পারেন!"


সরকারি ভাবে গাড়ির নাম্বার দিয়ে তথ্য বের করা এখন আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে। আপনি চাইলে BRTA অফিসে গিয়ে অথবা তাদের অনলাইন সেবা ব্যবহার করে এই তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। এটি গাড়ি যাচাইয়ের একটি নির্ভরযোগ্য উপায় এবং আইনগতভাবে গ্রহণযোগ্য।

BRTA অফিসে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে এবং প্রয়োজনীয় চার্জ প্রদান করে আপনি গাড়ির মালিক, রেজিস্ট্রেশন, ফিটনেস এবং ইনস্যুরেন্স সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারবেন। অনেক সময় পুলিশি তদন্ত বা মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে অফিসে সরাসরি যাওয়া দরকার হয়।

অন্যদিকে, BRTA-এর অনলাইন পোর্টালও অনেক কার্যকর। brta.gov.bd ওয়েবসাইটে নির্দিষ্ট ফর্ম ফিলাপ করে আপনি অনলাইনে গাড়ির তথ্য জানতে পারেন। এতে সময়, খরচ ও ঝামেলা অনেকটাই কমে যায়। সরকারের এই ডিজিটাল সেবাগুলো নাগরিকদের জন্য বড় সুবিধা এনে দিয়েছে।

গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের তথ্য জানার অ্যাপ

"সরকারি অ্যাপ ব্যবহার করলে আপনি পাবেন রিয়েল-টাইম মালিকানা তথ্য!"


বর্তমানে প্রযুক্তির অগ্রগতির কারণে গাড়ির নাম্বার দিয়ে তথ্য জানার অ্যাপ ব্যবহার অনেক সহজ এবং সাশ্রয়ী হয়েছে। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (BRTA) একটি অফিসিয়াল মোবাইল অ্যাপ চালু করেছে যেখানে আপনি আপনার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ইনপুট দিয়ে মালিকানা সংক্রান্ত তথ্য জানতে পারবেন। এই অ্যাপটি Google Play Store থেকে বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায় এবং ব্যবহারও অত্যন্ত সহজ।

অ্যাপটিতে আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম, রেজিস্ট্রেশন তারিখ, ফিটনেস, ইনস্যুরেন্স, ট্যাক্স টোকেন এবং চলমান কোন জরিমানা আছে কি না তা জানতে পারবেন। এটি বিশেষ করে তাদের জন্য উপযোগী, যারা গাড়ি কেনার আগে তথ্য যাচাই করতে চান কিংবা আইনগত কোন জটিলতা হলে দ্রুত তথ্য পেতে চান।

সরকারি অ্যাপ ব্যবহারে তথ্যের সঠিকতা বেশি থাকে কারণ এটি সরাসরি BRTA-এর ডাটাবেজ থেকে যুক্ত থাকে। ফলে ভুল তথ্য পাবার সম্ভাবনা কম এবং তথ্য হালনাগাদ থাকে। এটি তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গঠনে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

SMS-এর মাধ্যমে গাড়ির তথ্য জানুন (যদি সক্রিয় থাকে)

অনেক সময় ইন্টারনেট না থাকলেও SMS-এর মাধ্যমে গাড়ির তথ্য জানার সুবিধা ব্যবহার করা যায়। BRTA পূর্বে একটি সেবা চালু করেছিল যেখানে আপনি নির্দিষ্ট ফরম্যাটে গাড়ির নাম্বার লিখে ১৬২২২ নাম্বারে পাঠালেই একটি ফিরতি বার্তায় মালিকানাসহ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়ে যেতেন।

এই পদ্ধতিটি মূলত তাদের জন্য কার্যকর যারা স্মার্টফোন ব্যবহার করেন না অথবা ইন্টারনেট সংযোগে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। শুধু একটি সাধারণ মোবাইল ফোন দিয়েই এই সেবাটি নেওয়া যায়। তবে বর্তমানে এই সেবাটি সক্রিয় কিনা তা যাচাই করে নেওয়া উচিত কারণ মাঝে মাঝে প্রযুক্তিগত বা নীতিগত কারণে এটি সাময়িকভাবে বন্ধ থাকে।

যদি এই সেবাটি সক্রিয় থাকে, তবে এর মাধ্যমে আপনি পাবেন গাড়ির মালিকের নাম, গাড়ির ধরন, রেজিস্ট্রেশন তারিখ, ফিটনেস এবং ইনস্যুরেন্স সম্পর্কিত তথ্য। এটি দ্রুত, সহজ এবং সাশ্রয়ী একটি মাধ্যম, যা বিশেষ করে ট্রাফিক পুলিশ ও গ্রামীণ এলাকার নাগরিকদের জন্য সহায়ক।

অনলাইন ওয়েবসাইট দিয়ে গাড়ির মালিক খোঁজা (Third Party Tools)


সরকারি প্ল্যাটফর্ম ছাড়াও কিছু third-party ওয়েবসাইট রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের তথ্য জানতে পারেন। যেমন: carinfo.com.bd এই ধরনের একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যা BRTA-এর পাবলিক ডেটা ব্যবহার করে গাড়ির তথ্য প্রদর্শন করে।

এই ধরনের সাইটে গাড়ির নাম্বার ইনপুট করলেই আপনি পাবেন গাড়ির রেজিস্ট্রেশন স্ট্যাটাস, মালিকের নাম, ইঞ্জিন নম্বর, চেসিস নম্বর, এবং ইনস্যুরেন্স তথ্য। যদিও সমস্ত তথ্য BRTA-এর মতো ১০০% নির্ভরযোগ্য নয়, তারপরও সাধারণ যাচাইয়ের জন্য এটি কার্যকর।

অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম যেমন Aponhut.com বা ekhanei.com এর গাড়ির বিজ্ঞাপনে প্রায়ই গাড়ির তথ্য এবং বিক্রেতার বিস্তারিত বিবরণ থাকে। সেখান থেকেও আপনি প্রাথমিক যাচাই করতে পারেন। তবে অবশ্যই ক্রয় করার পূর্বে অফিসিয়াল সোর্সে তথ্য যাচাই করে নেয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

গাড়ি কেনার আগে মালিকানা যাচাই কেন গুরুত্বপূর্ণ?

"ফেক ডকুমেন্টের ঝুঁকি কমাতে অবশ্যই যাচাই করুন মালিকানা!"

গাড়ি কেনার আগে মালিকানা যাচাই করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি আপনাকে প্রতারণা থেকে রক্ষা করে। অনেক সময় দেখা যায় যে, গাড়ির মালিকানা অন্য কারও নামে থাকে অথচ কেউ জাল কাগজপত্র দেখিয়ে বিক্রির চেষ্টা করছে। আপনি যদি যাচাই না করেন, তাহলে এমন জালিয়াতির শিকার হয়ে যেতে পারেন।

সঠিক মালিকানা যাচাই করলে আপনি বুঝতে পারবেন গাড়িটি আইনগতভাবে বৈধ কিনা, আগে কখনো চুরি হয়েছিল কি না, কিংবা গাড়িটির ওপরে কোন মামলা বা জরিমানা আছে কি না। বিশেষ করে ব্যবহৃত (used) গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে এই যাচাই অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

এছাড়া পূর্বের মালিকদের রেকর্ড থেকে আপনি গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থা সম্পর্কেও ধারণা পাবেন। মালিকানা যাচাই করলে আপনি গাড়িটির ভবিষ্যৎ রেজিস্ট্রেশন, ট্রান্সফার এবং ইনস্যুরেন্স পদ্ধতি সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন। তাই এটি শুধু প্রয়োজনই নয়, বরং একটি অত্যাবশ্যকীয় ধাপ।

গাড়ির নাম্বার থেকে কী কী তথ্য পাওয়া যায়?

গাড়ির নাম্বার দিয়ে আপনি BRTA এবং অন্যান্য নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ গাড়ির ডিটেইলস জানতে পারেন। যেমন, মালিকের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর ও তারিখ, গাড়ির ধরন (private/commercial), মডেল, রঙ, ফিটনেস স্ট্যাটাস, ট্যাক্স টোকেন এবং ইনস্যুরেন্স তথ্য ইত্যাদি।

এই তথ্যগুলোর মাধ্যমে আপনি বুঝতে পারবেন গাড়িটির বর্তমান অবস্থা এবং সেটি আইনগতভাবে সঠিক কিনা। বিশেষ করে গাড়ির ফিটনেস এবং ইনস্যুরেন্স তথ্য জানা জরুরি কারণ এগুলো নিয়মিত হালনাগাদ না থাকলে আপনার গাড়ির বিরুদ্ধে মামলা বা জরিমানা হতে পারে।

এছাড়াও কিছু প্ল্যাটফর্মে অতীতের জরিমানা, চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর সম্পর্কেও তথ্য পাওয়া যায় যা গাড়ির আসল ও জাল পার্থক্য বুঝতে সাহায্য করে। তাই শুধুমাত্র নাম্বার প্লেট থেকেই আপনি একটি পূর্ণাঙ্গ চিত্র পেতে পারেন গাড়িটির সম্পর্কে।

তথ্য ভুল হলে কী করবেন?

অনেক সময় দেখা যায়, আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে যে তথ্য পেয়েছেন তা বর্তমান মালিকানা বা গাড়ির অবস্থা অনুযায়ী মিলছে না। এ ধরনের ক্ষেত্রে আপনি প্রথমেই যাচাই করবেন তথ্যটি BRTA-এর ওয়েবসাইটে দেওয়া কি না। যদি সেখানে ভুল থাকে, তবে তথ্য আপডেটের জন্য সঠিক ব্যবস্থা নিতে হবে।

BRTA অফিসে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে এবং সংশ্লিষ্ট ডকুমেন্ট (জাতীয় পরিচয়পত্র, রেজিস্ট্রেশন কাগজপত্র) জমা দিয়ে আপনি ভুল তথ্য সংশোধনের আবেদন করতে পারেন। সাধারণত ৭-১০ কর্মদিবসের মধ্যে সংশোধনের কাজ সম্পন্ন হয়।

তথ্য ভুল থাকলে তা আইনগতভাবেও সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। তাই ব্যক্তিগত ও সামাজিক নিরাপত্তার স্বার্থে এবং ভবিষ্যৎ ঝামেলা এড়াতে তথ্য হালনাগাদ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

প্রাইভেসি এবং তথ্যের সীমাবদ্ধতা

গাড়ির মালিকানা যাচাই করতে গেলে অনেকেই ভাবেন তারা পুরোপুরি ব্যক্তিগত তথ্য পেয়ে যাবেন, যেমন মালিকের ফোন নম্বর বা ঠিকানা। কিন্তু বাস্তবে BRTA বা অন্য কোনো সার্ভিস এমন তথ্য সরাসরি প্রকাশ করে না। কারণ এগুলো প্রাইভেসি আইন দ্বারা সুরক্ষিত।

BRTA শুধুমাত্র মালিকের নাম, রেজিস্ট্রেশন তথ্য, ট্যাক্স, ফিটনেস ও ইন্স্যুরেন্স সম্পর্কিত ডেটা প্রকাশ করে। ব্যক্তিগত ডিটেইলস, যেমন ঠিকানা, ফোন নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর এসব তথ্য সাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয়।

আইনের দৃষ্টিতে এসব তথ্য প্রকাশ করলে বা অপব্যবহার করলে সেটি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে পারে। তাই সব সময় আইন অনুযায়ী তথ্য ব্যবহার করা উচিত।

গাড়ির মালিকানা যাচাই করতে কত টাকা লাগে?

গাড়ির মালিকানা যাচাই করতে হলে কিছু নির্দিষ্ট সরকারি চার্জ ও ফি রয়েছে। যদি আপনি BRTA অফিস থেকে তথ্য সংগ্রহ করতে চান, তাহলে নির্ধারিত ফি দিতে হবে যা সাধারণত ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত হয়।

অনলাইন বা অ্যাপের মাধ্যমে যাচাই করলে অনেক সময় তা বিনামূল্যে পাওয়া যায়, তবে কিছু নির্দিষ্ট সার্ভিস বা এক্সট্রা তথ্যের জন্য চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে। এছাড়াও, থার্ড পার্টি সাইট (যেমন carinfo.com.bd) কিছু বেসিক তথ্য ফ্রি দেয়, কিন্তু ডিপ রিপোর্ট বা ডাউনলোড করতে চাইলে ১০০-৫০০ টাকা পর্যন্ত চার্জ করতে পারে।

সার্ভিস চার্জ ছাড়াও অনেকে যাচাই করার জন্য সাইবার ক্যাফে বা এজেন্টের সাহায্য নেন, যেখানে অতিরিক্ত সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য হতে পারে। তাই যাচাই করার আগে নির্দিষ্ট প্ল্যাটফর্মের খরচ জেনে নেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ।

ভবিষ্যতে গাড়ির তথ্য প্রযুক্তি কেমন হবে?

"QR কোড দিয়ে ভবিষ্যতে গাড়ির তথ্য জানার প্রক্রিয়া আরও সহজ হবে!"

বাংলাদেশে গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ও তথ্য প্রযুক্তি দিন দিন আরও উন্নত হচ্ছে। ভবিষ্যতে BRTA সম্পূর্ণরূপে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করতে চায় যেখানে গাড়ির সব তথ্য রিয়েল-টাইমে আপডেট থাকবে এবং যেকোনো নাগরিক সহজে তা যাচাই করতে পারবেন।

একটি উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তি হলো QR কোড-ভিত্তিক যাচাই। নতুন রেজিস্ট্রেশন কার্ড বা নম্বর প্লেটে QR কোড যুক্ত থাকবে যা স্ক্যান করলেই আপনি গাড়ির যাবতীয় তথ্য পেয়ে যাবেন। এতে জালিয়াতি কমবে এবং চেকিং আরও দ্রুত ও সহজ হবে।

এছাড়াও, IoT (Internet of Things) ও ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে ফিটনেস, রেজিস্ট্রেশন ও জরিমানা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ট্র্যাক করা যাবে। এটি শুধু ব্যক্তির জন্য না, বরং পুলিশ প্রশাসনের জন্যও হবে একটি যুগান্তকারী সমাধান।

কিছু সাধারণ প্রশ্ন ও উত্তর (FAQs)

আমি কি অন্যের গাড়ির তথ্য জানতে পারি?

হ্যাঁ, আপনি গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ব্যবহার করে মালিকের নাম, ফিটনেস, ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স সম্পর্কিত তথ্য জানতে পারেন। তবে ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ঠিকানা বা ফোন নম্বর পাবেন না।

অনলাইন ছাড়া কি বিকল্প আছে?

হ্যাঁ, আপনি BRTA অফিসে গিয়ে নির্ধারিত ফরম পূরণ করে তথ্য সংগ্রহ করতে পারেন। অনলাইনের বাইরে এটিই সরকারি অনুমোদিত পদ্ধতি।

গাড়ির নাম্বার ভুল হলে কি হবে?

ভুল নাম্বার দিলে আপনি ফলাফল পাবেন না বা ভুল তথ্য আসবে। তাই “Dhaka Metro Ga 123456” এরকম সঠিক ফরম্যাটে নাম্বার দিতে হবে।

পুলিশি কাজে কি এই তথ্য ব্যবহার হয়?

অবশ্যই। ট্রাফিক পুলিশ এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ গাড়ির নাম্বার থেকে মালিকানা যাচাই করে অপরাধীদের চিহ্নিত করতে এই তথ্য ব্যবহার করে থাকে।

আমার গাড়ির তথ্য হালনাগাদ কিভাবে করবো?

আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র, রেজিস্ট্রেশন পেপার ও নির্ধারিত ফরম সহ BRTA অফিসে আবেদন করতে হবে। যাচাই শেষে তারা তথ্য হালনাগাদ করবে।

গাড়ির তথ্য যাচাইয়ের মাধ্যম ও খরচ তুলনা

তথ্য যাচাই মাধ্যম সরকারি/বেসরকারি প্রাপ্ত তথ্য খরচ (আনুমানিক)
BRTA অফিস সরকারি মালিকানা, ফিটনেস, রেজিস্ট্রেশন ৫০-১০০ টাকা
BRTA ওয়েবসাইট সরকারি বেসিক মালিকানা তথ্য বিনামূল্যে
BRTA অ্যাপ সরকারি রিয়েল-টাইম তথ্য বিনামূল্যে
carinfo.com.bd বেসরকারি মালিকানা, মডেল, জরিমানা ১০০-৫০০ টাকা
SMS পদ্ধতি সরকারি সংক্ষিপ্ত তথ্য ২-৫ টাকা প্রতি SMS

সারাংশ ও উপসংহার

আজকের প্রযুক্তির যুগে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম জানার কাজটি আগের তুলনায় অনেক সহজ হয়েছে। সরকারি প্ল্যাটফর্ম যেমন BRTA এবং carinfo.com.bd এর মাধ্যমে ঘরে বসেই আপনি যাচাই করতে পারেন মালিকানা, রেজিস্ট্রেশন, ট্যাক্স ও আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। তবে অবশ্যই এই তথ্য ব্যবহার করতে হবে আইন ও নীতিমালার মধ্যে থেকে। তথ্যের অপব্যবহার আইনত দণ্ডনীয়।


📝 গাড়ির তথ্য যাচাই করুন, নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ুন!

Internal Links: