মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ২০২৫ – খরচ, নিয়ম ও বিস্তারিত তথ্য
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন ফি ২০২৫ – খরচ, নিয়ম ও বিস্তারিত তথ্য
বাংলাদেশে যারা মোটরসাইকেল ব্যবহার করেন বা নতুন করে বাইক কিনতে যাচ্ছেন, তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপগুলোর মধ্যে একটি হলো রেজিস্ট্রেশন। এটি শুধু আইনি বাধ্যবাধকতা নয়, বরং এটি একজন বাইক মালিক হিসেবে আপনার দায়িত্ব ও সচেতনতার পরিচয়ও দেয়। রাস্তায় নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা, জরিমানার ঝামেলা থেকে বাঁচা এবং নিজের সম্পদের স্বত্ব প্রতিষ্ঠা—এই তিনটি বিষয়ের মূলে রয়েছে বাইকের সঠিক রেজিস্ট্রেশন।
২০২৫ সালে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন ফি কিছুটা পরিবর্তন এসেছে, যুক্ত হয়েছে নতুন কিছু ফি এবং প্রক্রিয়াও হয়েছে আরও সহজ। আমি এই লেখায় আমার নিজস্ব অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত প্রতিটি ধাপ, খরচ, কাগজপত্র, সময়, ট্যাক্স ও ইনস্যুরেন্স—সব কিছু একসাথে তুলে ধরেছি, যেন আপনি সহজেই বুঝতে পারেন এবং নিজেই ব্যবস্থা নিতে পারেন।
রেজিস্ট্রেশন কেন গুরুত্বপূর্ণ?
বাংলাদেশে বাইক চালানো শুধু ব্যক্তিগত সুবিধার বিষয় নয়, এটা আইন অনুযায়ীও কিছু দায়িত্ব নিয়ে আসে। রেজিস্ট্রেশন না থাকলে সেটা শুধু নিয়ম ভঙ্গ নয়, বরং আপনার নিজের নিরাপত্তার জন্যও একটা ঝুঁকি। ধরুন, আপনি প্রতিদিন অফিসে যাতায়াত করেন বাইকে, হঠাৎ পুলিশ রোড চেক দিল—আপনার কাছে রেজিস্ট্রেশন নেই। তখন জরিমানার মুখে পড়বেন, এমনকি বাইক জব্দও হতে পারে।
আমার এক বন্ধু বাইক কিনে ৬ মাস রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই চালিয়েছিল। একদিন পুলিশ থামিয়ে তার বাইকটা আটক করে। পরে অনেক দৌড়াদৌড়ি করে বাইক ছাড়াতে হয়েছিল। এই অভিজ্ঞতা থেকেই বুঝেছি, রেজিস্ট্রেশন মানে শুধু কাগজ নয়—এটা একধরনের নিশ্চয়তা, যে বাইকটা আপনার, এবং আপনি তা বৈধভাবে চালাচ্ছেন।
২০২৫ সালে রেজিস্ট্রেশন খরচ কত?
২০২৫ সালে বাইকের রেজিস্ট্রেশন ফি নিয়ে কিছু পরিবর্তন এসেছে। আগে যেখানে ৮০ সিসির নিচে বাইকের জন্য খরচ হতো প্রায় ৮,০০০ টাকা, এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০,৫০০ টাকার মতো। আর ১০০ সিসির ওপর হলে খরচ ১৯,০০০ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে। এতে রোড ট্যাক্স, ফিটনেস ফি, স্মার্ট কার্ড ফি, নাম্বার প্লেট, ভ্যাট ও অন্যান্য চার্জ অন্তর্ভুক্ত থাকে।
আমি যখন নিজের বাইকটা রেজিস্ট্রেশন করি, তখন বাজেট হিসাব ছাড়িয়ে গিয়েছিল। তাই নতুনদের জন্য বলবো—শুধু বাইকের দাম নয়, রেজিস্ট্রেশন বাবদ খরচটাও আগে থেকেই জেনে নিন। এতে সময় এবং টাকা—দু’টোই বাঁচবে।
BRTA রেজিস্ট্রেশন নিয়ম
বাংলাদেশে বাইক রেজিস্ট্রেশন করাতে গেলে কয়েকটি ধাপে যেতে হয়। প্রথমে BRTA অনুমোদিত বাইকের শোরুম থেকে বাইক কেনার পর, বিক্রয় চালান, ইনভয়েস এবং জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে। এরপর নিকটস্থ BRTA অফিসে যেতে হবে।
সেখানে নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের জন্য আবেদন করতে হয়। তারপর বাইকের চেসিস ও ইঞ্জিন নম্বর যাচাই করা হয়। এরপর ফিটনেস চেক, ইনস্পেকশন এবং অন্যান্য ধাপ শেষে আপনি স্মার্ট কার্ড এবং নাম্বার প্লেট পাবেন। আমি নিজে ঢাকায় এই প্রসেসে ১০ দিন সময় নিয়েছিলাম, কারণ প্রথমবার ইনভয়েসে ভুল ছিল। পরে ঠিক করে আবার জমা দিই। তাই আপনাদের বলছি, কাগজগুলো আগেভাগে যাচাই করে নেবেন।
স্মার্ট কার্ড ফি ও নাম্বার প্লেট খরচ
মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশনের সময় স্মার্ট কার্ড এবং নাম্বার প্লেট দুইটাই বাধ্যতামূলকভাবে নিতে হয়। স্মার্ট কার্ডে আপনার বাইকের সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে—মালিকের নাম, ইঞ্জিন নম্বর, রেজিস্ট্রেশন তারিখসহ। এটা আসলে আপনার বাইকের আইডি কার্ডের মতোই।
স্মার্ট কার্ড নেওয়ার জন্য এখন নির্ধারিত ফি হলো প্রায় ১,৩৫০ টাকা। আর হাই সিকিউরিটি নাম্বার প্লেটের জন্য দিতে হয় প্রায় ২,৭০০ টাকা। নাম্বার প্লেট এখন এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে তা সহজে নকল বা পরিবর্তন করা না যায়।
আমি যখন নাম্বার প্লেট নিতে যাই, তখন অফিসে দেখি অনেকে আগে থেকেই জানে না—এই প্লেট আর কার্ড দুইটোর আলাদা ফি আছে। ফলে সেদিনই আবার গিয়ে টাকা তুলে আনতে হয়েছে। আপনি যেন এমন পরিস্থিতিতে না পড়েন, তাই বলছি—বাইক কেনার সময় এই ফিগুলাও বাজেটে রাখবেন।
রোড ট্যাক্স ও অন্যান্য ফি
বাংলাদেশে বাইক চালাতে হলে রোড ট্যাক্স নিয়মিত পরিশোধ করতে হয়। সাধারণত এই ট্যাক্স দুই বছরের জন্য নেওয়া হয় এবং এটি রেজিস্ট্রেশনের সময় একসাথে জমা দিতে হয়। রোড ট্যাক্সের পরিমাণ নির্ভর করে বাইকের সিসি অনুযায়ী। উদাহরণস্বরূপ, ৮০ সিসি বাইকের ক্ষেত্রে রোড ট্যাক্স কম, আর ১৫০ সিসির ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি।
এছাড়া আরও কিছু খরচ রয়েছে, যেমন ফিটনেস ফি (৪৫০ টাকা), ইনস্পেকশন ফি (২০০ টাকা) এবং VAT ও সারচার্জও দিতে হয়। আমার নিজের অভিজ্ঞতা হলো—অনেক সময় এসব ছোট ছোট চার্জ যোগ হয়ে বড় অঙ্কে পৌঁছে যায়। তাই রেজিস্ট্রেশনের আগে ভালোভাবে খরচের তালিকা দেখে নিন। এতে ঝামেলা হবে না এবং আপনি বাজেটের বাইরে যাবেন না।
অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রসেস
এই ফি ভিন্নতার পেছনে কারণ হিসেবে ধরা যায়—অফিসের চাপ, লোকাল নাম্বার প্লেট ডিস্ট্রিবিউশনের খরচ, প্রসেসিং টাইম, অতিরিক্ত কমিশন ফি ইত্যাদি। তাই আপনি যেখান থেকেই বাইক কিনুন না কেন, কাছের BRTA অফিসে গিয়ে তাদের নির্ধারিত চার্জ সম্পর্কে আগে থেকেই জেনে নেওয়া ভালো। এতে আপনি বাজেট হিসাব যথাযথভাবে করতে পারবেন এবং হঠাৎ বাড়তি খরচে পড়তে হবে না।
বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় রেজিস্ট্রেশন ফি কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে, বিশেষত বিভাগীয় শহর ও জেলা শহর অনুযায়ী। উদাহরণস্বরূপ, ঢাকায় রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে অতিরিক্ত কিছু চার্জ যুক্ত হতে পারে যেমন উন্নয়ন ফি বা লোকাল প্রসেসিং চার্জ। অন্যদিকে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনা বা রংপুরের BRTA অফিসগুলোতে তুলনামূলকভাবে কম খরচ হয়।
লোকেশনভিত্তিক ফি ভিন্নতা
BRTA তে মালিকানা পরিবর্তনের জন্য আপনাকে ট্রান্সফার ফরম পূরণ করে, বিক্রয় চুক্তিপত্র, পুরাতন রেজিস্ট্রেশন কার্ড, ক্রেতা ও বিক্রেতার NID কপি সহ জমা দিতে হয়। নির্ধারিত ট্রান্সফার ফি পরিশোধ করার পর আবেদন প্রসেস হয় এবং কিছুদিনের মধ্যেই আপনার নামে নতুন স্মার্ট কার্ড ইস্যু হয়। আমি একবার ট্রান্সফার না করায় ইন্স্যুরেন্স ক্লেইমে ঝামেলায় পড়েছিলাম, তাই এখন বলি – দেরি না করে কাগজপত্র ঠিক করে ফেলুন।
আপনি যদি কারও কাছ থেকে দ্বিতীয় হাত বাইক কিনে থাকেন, তাহলে মালিকানা আপনার নামে ট্রান্সফার করানো অত্যন্ত জরুরি। অনেক সময় দেখা যায়, বাইক তো কিনে নেওয়া হয়েছে, কিন্তু পুরোনো মালিকের নামেই কাগজপত্র রয়েছে। এতে সমস্যা হয় দুর্ঘটনা, জরিমানা কিংবা পুলিশি চেকের সময়।
দ্বিতীয় হাত বাইক রেজিস্ট্রেশন ট্রান্সফার
অনেক সময় আমরা পরিচিত কারো কাছ থেকে বাইক কিনি, পুরোনো বাইক হলেও ভালো কন্ডিশনে থাকে। কিন্তু অনেকেই একটা বড় ভুল করে বসেন—মালিকানা বদলের কাজটা না করে শুধু চাবি আর কাগজ নিয়ে চালানো শুরু করে দেন। এটা ঝুঁকিপূর্ণ।
BRTA-তে বাইক ট্রান্সফার করতে হলে প্রথমে প্রয়োজন বিক্রেতা ও ক্রেতার জাতীয় পরিচয়পত্র, বিক্রয় চুক্তিপত্র, পুরনো স্মার্ট কার্ড, ছবি এবং নির্ধারিত ফি। এরপর আবেদন করতে হয় নির্দিষ্ট ফর্মে। আমার এক আত্মীয় একবার মালিকানা না বদলে বাইক চালিয়ে চ্যালান খেয়েছিলেন, কারণ পুলিশ সিস্টেমে নাম ছিল আগের মালিকের। পরে অনেক ঝামেলা করে ঠিক করতে হয়েছে।
তাই বাইক কেনার সঙ্গে সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন ট্রান্সফারটা করিয়ে ফেলুন। এতে আইনি ঝামেলা থেকেও বাঁচবেন, আর নিজের সম্পদের ওপর পূর্ণ অধিকারও পাবেন।
মোটরসাইকেল ইনস্যুরেন্স
মোটরসাইকেল ইনস্যুরেন্স নিয়ে আমাদের অনেকের মধ্যেই ভুল ধারণা থাকে। অনেকেই ভাবেন এটা শুধুই জরিমানার হাত থেকে বাঁচার জন্য, কিন্তু বাস্তবে এটি অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। ইনস্যুরেন্স থাকলে আপনি দুর্ঘটনা বা চুরির মতো যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আর্থিক সুরক্ষা পান।
বাংলাদেশে তৃতীয় পক্ষ ইনস্যুরেন্স বাধ্যতামূলক, অর্থাৎ আপনি যদি দুর্ঘটনায় অন্য কারও ক্ষতি করেন, তাহলে সেটার ক্ষতিপূরণ এই ইনস্যুরেন্স থেকেই দেওয়া হয়। কমপ্রিহেনসিভ ইনস্যুরেন্স আরও ভালো কারণ এতে বাইকের ক্ষতি, চুরি, অগ্নিকাণ্ড ইত্যাদিও কাভার করে। আমি প্রথমবার এই ইনস্যুরেন্স বিষয়টিকে গুরুত্ব দিইনি। একবার হঠাৎ করে একটি ট্রাকের সাথে ধাক্কা লাগার পর বুঝি—ইনস্যুরেন্স ছাড়া কতোটা বিপদে পড়া যায়। তাই আমার অভিজ্ঞতা থেকে বলছি—বাইক কিনে সঙ্গে সঙ্গে ইনস্যুরেন্স করিয়ে নিন।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র
বাইক রেজিস্ট্রেশনের সময় যেসব কাগজপত্র লাগে, তা যদি আগে থেকেই গুছিয়ে রাখেন, তাহলে অফিসে গিয়ে ঝামেলা কম হয়। আমার অভিজ্ঞতা বলছে—সঠিক কাগজ হাতে না থাকলে ফাইল রিজেক্ট হতে একটুও সময় লাগে না।
প্রয়োজনীয় কাগজগুলো হলো: জাতীয় পরিচয়পত্র (NID), বাইক কেনার চালান এবং ইনভয়েস, দুই কপি পাসপোর্ট সাইজ ছবি, বিদ্যুৎ বিল বা অন্য ঠিকানা প্রমাণ, মোবাইল নম্বর এবং প্রয়োজনে TIN সার্টিফিকেট। যদি বাইকটি কোম্পানির নামে হয়, তবে ট্রেড লাইসেন্স ও অথরাইজেশন লেটারও লাগবে। অনলাইন আবেদন করলে এসবের স্ক্যান কপিও দরকার হয়। তাই বাইক কেনার পরপরই এই কাগজগুলো গুছিয়ে রাখুন।
রেজিস্ট্রেশনের সময় লাগবে কত?
রেজিস্ট্রেশন প্রসেসে কতদিন সময় লাগে—এটা নির্ভর করে আপনি সবকিছু ঠিকভাবে করেছেন কি না। সাধারণত যদি কাগজপত্র সঠিক থাকে, তাহলে ৭ থেকে ১০ কর্মদিবসের মধ্যেই রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হয়ে যায়। তবে বড় শহরে বা কোনো উৎসবের আগে এই সময়টা বাড়তেও পারে।
আমার ক্ষেত্রে, প্রথমবার ইনভয়েসে ভুল থাকার কারণে আবার আবেদন করতে হয়েছিল, আর এতে ৫ দিন সময় বেশি লেগে যায়। তাই সবার জন্য পরামর্শ—ফর্ম পূরণ ও ডকুমেন্ট সাবমিট করার সময় যেন কোনো ভুল না হয়। BRTA এখন কিছু জায়গায় অনলাইন অ্যাপ্লিকেশন চালু করেছে, ফলে সময় কিছুটা কম লাগছে। তবে স্মার্ট কার্ড ও নাম্বার প্লেট ডেলিভারি পেতে একটু অপেক্ষা করতেই হয়।
বাইক রেজিস্ট্রেশন চেক করার উপায়
আপনার বাইকের রেজিস্ট্রেশন সত্যিই হয়েছে কিনা, সেটা নিশ্চিত হওয়া খুব দরকার। এখন এটা খুব সহজেই করা যায় BRTA-এর ওয়েবসাইট থেকে। সেখানে গিয়ে 'Vehicle Info' অপশনে ক্লিক করে আপনার রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিলেই দেখা যাবে—কবে রেজিস্ট্রেশন হয়েছে, মালিকের নাম, ফিটনেস স্ট্যাটাস, ট্যাক্স পেমেন্ট সহ সব তথ্য।
আমি প্রথমে সঠিক সাইট খুঁজে পাইনি। পরে বুঝলাম শুধু www.brta.gov.bd ব্যবহার করলেই হবে। অনেক সময় কোনো দালাল বা ভুয়া ওয়েবসাইটে গিয়ে লোকজন ভুল তথ্য দেয়। তাই সাবধান থাকতে হবে। আর যদি দেখেন আপনার তথ্য ভিন্নভাবে আসছে, সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট BRTA অফিসে যোগাযোগ করবেন।
সচরাচর জিজ্ঞাসা (FAQs)
১. মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন কত টাকা লাগে?
মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন খরচ নির্ভর করে বাইকের সিসি’র ওপর। সাধারণত ৮০ সিসি পর্যন্ত বাইকের জন্য খরচ হয় প্রায় ৬,০০০ টাকা এবং ১৫০ সিসি পর্যন্ত হলে খরচ হতে পারে প্রায় ১১,০০০ টাকা। এর সঙ্গে রোড ট্যাক্স, স্মার্ট কার্ড ফি ও নাম্বার প্লেট চার্জও যুক্ত হয়, যা মোট খরচ বাড়িয়ে দেয়।
২. রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাইক চালালে কী হয়?
বাংলাদেশের ট্রাফিক আইনে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া বাইক চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। পুলিশ যেকোনো সময় বাইক থামিয়ে কাগজপত্র চেক করতে পারে। যদি রেজিস্ট্রেশন না থাকে, তবে জরিমানা, মামলা এমনকি বাইক জব্দও করা হতে পারে। এছাড়া দুর্ঘটনার সময় ক্ষতিপূরণ পাওয়া কিংবা দাবি করাও কঠিন হয়ে পড়ে।
৩. বাইকের রেজিস্ট্রেশন কত দিনে হয়?
সাধারণত সব প্রয়োজনীয় কাগজ ঠিক থাকলে BRTA থেকে বাইকের রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হতে ৭ থেকে ১৫ কার্যদিবস সময় লাগে। তবে কিছু ক্ষেত্রে অফিসিয়াল ভেরিফিকেশন, ফিটনেস চেক বা কারিগরি সমস্যা থাকলে সময় একটু বাড়তে পারে। আগেভাগে সব কাগজ রেডি থাকলে দ্রুত প্রসেস হয়।
৪. পুরাতন বাইকের মালিকানা বদলানো কি সম্ভব?
হ্যাঁ, পুরাতন মোটরসাইকেলের মালিকানা বদলানো যায় খুব সহজেই। BRTA অফিসে নির্ধারিত ফি ও কাগজপত্র জমা দিয়ে ট্রান্সফার আবেদন করতে হয়। ক্রেতা-বিক্রেতার NID, বাইকের রেজিস্ট্রেশন কপি, চুক্তিপত্র ইত্যাদি লাগে। কিছুদিনের মধ্যেই নতুন মালিকের নামে স্মার্ট কার্ড ইস্যু করা হয়।
৫. বাইকের রেজিস্ট্রেশন চেক করার অনলাইন উপায় কী?
আপনি BRTA-এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে (brta.gov.bd) গিয়ে “Vehicle Information” অপশনে বাইকের নাম্বার দিয়ে রেজিস্ট্রেশন তথ্য যাচাই করতে পারেন। এতে মালিকের নাম, ফিটনেস স্ট্যাটাস, রোড ট্যাক্স, ইন্সুরেন্স ইত্যাদি দেখা যায়। এটি খুব সহজ ও সময় বাঁচানো একটি অনলাইন সুবিধা।
সারাংশ ও উপসংহার
নিজের অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, বাইক কিনে যদি রেজিস্ট্রেশন না করেন, তাহলে অপ্রত্যাশিত ঝামেলায় পড়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। রেজিস্ট্রেশন খরচ একটু বেশি হলেও এটি আপনার নিরাপত্তা ও আইনি সুরক্ষার জন্য অপরিহার্য। উপরের তথ্যগুলো ২০২৫ সালের জন্য হালনাগাদ এবং BRTA থেকে নেওয়া।