১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল – ২০২৫ সালে সেরা পছন্দ

 প্রকাশ: ২৯ জুলাই ২০২৫, ০৬:৩১ অপরাহ্ন   |   মোবাইল

১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল – ২০২৫ সালে সেরা পছন্দ

১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল – ২০২৫ সালে সেরা পছন্দ

বর্তমান স্মার্টফোন বাজারে, অল্প বাজেটে ভালো মানের মোবাইল খুঁজে পাওয়া যেন একটা বড় চ্যালেঞ্জ। আমি নিজেও যখন আমার ভাইয়ের জন্য ১২০০০ টাকার মধ্যে একটি স্মার্টফোন কিনতে চেয়েছিলাম, তখন দেখি বাজারে অনেক বিকল্প আছে – তবে সবগুলোই ভালো না। তাই এই গাইডে আমি আপনাকে দেখাবো কীভাবে আপনি ১২০০০ টাকার মধ্যে একটি ভালো মোবাইল বেছে নিতে পারেন।

কেন ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল জনপ্রিয়?

বর্তমানে বাংলাদেশে স্মার্টফোনের ব্যবহার দিন দিন বেড়ে চলেছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে কম বাজেটের ফোনের চাহিদা। ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল ফোন কেন এত জনপ্রিয়? কারণ এ দামে আপনি সহজেই এমন একটি ফোন পেয়ে যাবেন যা দিয়ে ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, এমনকি হালকা গেমিং-ও চালানো যায়। এছাড়া ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী কিংবা সেকেন্ডারি ফোন খুঁজছেন এমন অনেকেই এই বাজেটেই ভালো অপশন খুঁজে পান। এই বাজেটের ফোনগুলোতে সাধারণত ভালো ব্যাটারি ব্যাকআপ, উন্নত ক্যামেরা ও মানসম্মত ডিজাইন থাকে। তাই কম খরচে একটি স্মার্ট জীবনযাপন করতে চাইলে এই বাজেট আদর্শ হতে পারে।

বাজেট ফোন কেনার সময় কী কী বিষয়ে খেয়াল রাখা উচিত?

বাজেট ফোন কেনার আগে অবশ্যই আপনাকে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। প্রথমেই ভাবুন আপনি ফোনটি কী কাজে ব্যবহার করবেন – গেম খেলবেন, নাকি শুধু কল, মেসেজ ও সোশ্যাল মিডিয়া চালাবেন? এরপর RAM এবং স্টোরেজ বিবেচনা করুন। কমপক্ষে ৩GB RAM এবং ৩২/৬৪GB ROM এই দামে পাওয়া যায়। ডিসপ্লে সাইজ ও রেজোলিউশনও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বড় ডিসপ্লে হলে ভিডিও দেখা কিংবা পড়ার সময় সুবিধা হয়। প্রসেসর শক্তিশালী হলে পারফরমেন্স ভালো হয়। ব্যাটারি ব্যাকআপ, চার্জিং টাইপ এবং ক্যামেরা কোয়ালিটিও দেখে নিন। অবশেষে, Android ভার্সন এবং UI কেমন সেটা যাচাই করা দরকার। এইসব বিষয়ে নজর রাখলেই আপনি ১২০০০ টাকার মধ্যেই সেরা ফোন বেছে নিতে পারবেন।

২০২৫ সালের সেরা ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল লিস্ট

বর্তমানে বাজারে ১২০০০ টাকার মধ্যে অনেক ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন পাওয়া যায়, তবে সেগুলোর মধ্যে কোনটি সেরা তা জানতে হলে কিছু নির্দিষ্ট ফোনের স্পেসিফিকেশন দেখা দরকার। আমি এখানে ২০২৫ সালের জন্য সেরা কিছু ফোনের তালিকা দিয়েছি যেগুলো আপনি এই বাজেটে কিনতে পারেন। এই ফোনগুলোতে ভালো ডিসপ্লে, নির্ভরযোগ্য প্রসেসর, উন্নত ক্যামেরা এবং শক্তিশালী ব্যাটারি রয়েছে। এছাড়া কিছু ফোনে 5G সাপোর্ট, Android 14 ভার্সন, এমনকি ৬GB পর্যন্ত RAMও পাওয়া যায়। এতে স্পষ্ট যে ১২০০০ টাকায় এখনকার দিনে অনেক ভালো ফিচার যুক্ত স্মার্টফোন পাওয়া সম্ভব। নিচে উল্লেখ করা মোবাইলগুলোর বিবরণ দেখে আপনার জন্য উপযুক্ত ফোনটি বেছে নিন।


1. Realme Narzo 50i Prime মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১০,৯৯০ টাকা

Realme Narzo 50i Prime এমন একটি ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল যা সুন্দর ডিজাইন এবং ভালো পারফরম্যান্সের সমন্বয়ে তৈরি। যারা প্রথমবারের মতো স্মার্টফোন ব্যবহার করতে যাচ্ছেন অথবা হালকা ইউজের জন্য ফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি উপযুক্ত পছন্দ। ফোনটিতে রয়েছে Unisoc T612 চিপসেট, যা সাধারণ কাজের জন্য যথেষ্ট। 6.5 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে, 5000mAh ব্যাটারি এবং স্মার্ট ক্যামেরা সেটআপ এটিকে এই বাজেটের মধ্যে একটি চমৎকার অপশন হিসেবে তুলে ধরেছে। স্টুডেন্ট, হোম ইউজার বা প্রাথমিক গেমিং ইউজারদের জন্য এটি আদর্শ একটি বাজেট ফোন।

ফিচারস:

6.5 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে
Unisoc T612 প্রসেসর
3GB RAM + 32GB স্টোরেজ
5000mAh শক্তিশালী ব্যাটারি
8MP রিয়ার ক্যামেরা + 5MP সেলফি

2. Infinix Smart 8 HD মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳৯,৯৯০ টাকা


Infinix Smart 8 HD ২০২৫ সালের ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল ফোন মার্কেটে একটি দারুণ সংযোজন। এই ফোনটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে এর 6.6 ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে যা 90Hz রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে। এর ফলে স্ক্রলিং, ভিডিও দেখা এবং সাধারণ ইউজের অভিজ্ঞতা অনেক বেশি স্মুথ ও উপভোগ্য হয়। ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে Unisoc SC9863A চিপসেট এবং 3GB RAM + 64GB ROM, যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট। এর 13MP প্রাইমারি ক্যামেরা ও 8MP ফ্রন্ট ক্যামেরা সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য ভালো ছবি তুলতে সাহায্য করে। বাজেট রেঞ্জে যারা গেমিং না করে সাধারণ কাজের জন্য স্মার্টফোন খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি একটি ভালো অপশন।

ফিচারস:

6.6" HD+ ডিসপ্লে (90Hz রিফ্রেশ রেট)

Unisoc SC9863A প্রসেসর

3GB RAM + 64GB ROM

13MP রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

3. itel S23 (4G) মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১১,৯৯০ টাকা

১২০০০ টাকার মধ্যে itel S23 (4G) বর্তমান মার্কেটে অন্যতম চমৎকার একটি মোবাইল ডিভাইস। ফোনটির সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো 128GB বিশাল ইন্টারনাল স্টোরেজ, যা এই বাজেটে খুব কম ফোনেই পাওয়া যায়। Unisoc T606 প্রসেসর এবং 4GB RAM মিলে ফোনটিকে যথেষ্ট স্মার্ট ও সাড়া দিতে সক্ষম করে। 90Hz রিফ্রেশ রেটের বড় ডিসপ্লে, 50MP রিয়ার ক্যামেরা এবং AI ফিচারসহ ছবি তোলার অভিজ্ঞতা উন্নত করে। এটি যারা স্টোরেজ-heavy ইউজার বা অনেক অ্যাপ ব্যবহার করেন, তাদের জন্য উপযোগী। একই সঙ্গে ফোনটি দেখতে স্টাইলিশ এবং হাতে নেওয়ার সময় প্রিমিয়াম ফিল দেয়।

ফিচারস:

6.6" HD+ ডিসপ্লে (90Hz রিফ্রেশ রেট)

Unisoc T606 অক্টা-কোর প্রসেসর

4GB RAM + 128GB ROM

50MP AI রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

4. Symphony Z60 Plus মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳৯,৪৯০ টাকা

Symphony Z60 Plus বাংলাদেশের বাজারে দেশীয় ব্র্যান্ডের অন্যতম ১২০০০ টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন। এটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে সাধারণ ইউজার, স্টুডেন্ট এবং হালকা গেমারদের কথা মাথায় রেখে। এই ফোনটির সবচেয়ে বড় আকর্ষণ হচ্ছে এর 52MP AI ক্যামেরা, যা এই দামের মধ্যে খুব কমই দেখা যায়। 6.6 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে এবং শক্তিশালী ব্যাটারির মাধ্যমে ফোনটি দীর্ঘক্ষণ ব্যবহার করা সম্ভব। ফোনটিতে রয়েছে Unisoc T606 চিপসেট, যা একাধিক অ্যাপ চালাতে বা সাধারণ গেম খেলার জন্য যথেষ্ট। বাজেট সীমিত থাকলেও যারা ভালো ক্যামেরা ও স্টাইলিশ ডিজাইন চান, তাদের জন্য এটি দারুণ একটি চয়েস।

ফিচারস:

6.6 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে

Unisoc T606 অক্টা-কোর চিপসেট

4GB RAM + 64GB স্টোরেজ

52MP AI রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

5. Tecno Pop 7 Pro মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১০,৪৯০ টাকা

১২০০০ টাকার মধ্যে সেরা Tecno Pop 7 Pro এমন একটি স্মার্টফোন যা মূলত এন্ট্রি-লেভেল ইউজারদের জন্য তৈরি। যারা সাধারণভাবে ইন্টারনেট ব্রাউজিং, ভিডিও দেখা, অনলাইন ক্লাস এবং দৈনন্দিন অ্যাপ ইউজ করে, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত। ফোনটিতে আছে 6.6 ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে এবং 13MP রিয়ার ক্যামেরা, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি পোস্ট করার জন্য ভালো রেজাল্ট দেয়। 3GB RAM এবং 64GB ROM থাকায় হালকা মাল্টিটাস্কিং ও ডেটা স্টোরেজে কোনো সমস্যা হয় না। Helio A22 প্রসেসরের মাধ্যমে পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালো, এবং 5000mAh ব্যাটারি আপনাকে পুরো দিন ব্যাকআপ দেবে।

ফিচারস:

6.6” HD+ ডিসপ্লে

MediaTek Helio A22 প্রসেসর

3GB RAM + 64GB স্টোরেজ

13MP রিয়ার + 5MP ফ্রন্ট ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

6. Walton Primo HM7 মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১০,২৯০ টাকা

Walton Primo HM7 বাংলাদেশের ঘরোয়া স্মার্টফোন ব্র্যান্ড ওয়ালটনের একটি জনপ্রিয় বাজেট ফোন। যারা দেশীয় পণ্যের প্রতি আগ্রহী এবং ভালো সাপোর্ট চান, তাদের জন্য এটি উপযুক্ত। ফোনটিতে রয়েছে MediaTek Helio G25 প্রসেসর, যা হালকা গেমিং, অনলাইন ক্লাস, ভিডিও দেখা কিংবা ফেসবুক চালানোর মতো সাধারণ কাজের জন্য যথেষ্ট। 6.52 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে এবং বড় 5000mAh ব্যাটারি ব্যবহারকারীদের দীর্ঘ সময় ব্যাকআপ দেয়। Walton-এর সফটওয়্যার ইন্টারফেস অনেকটাই ইউজার-ফ্রেন্ডলি, এবং এটি অফিসিয়ালি দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহজলভ্য। যারা স্থানীয় ব্র্যান্ডে বাজেট ফিচার চান, তাদের জন্য Primo HM7 একটি ভালো চয়েস।

ফিচারস:

6.52 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে

MediaTek Helio G25 প্রসেসর

4GB RAM + 64GB ROM

13MP রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

7. Lava Blaze 5G Lite মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১১,৯৯০ টাকা

১২০০০ টাকার মধ্যে Lava Blaze 5G Lite এই বাজেটে পাওয়া যায় এমন খুবই কম ৫জি ফোনের মধ্যে একটি। যারা ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে চান এবং দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা নিতে চান, তাদের জন্য এটি দারুণ এক বিকল্প। এতে ব্যবহৃত হয়েছে MediaTek Dimensity 6020 চিপসেট, যা ৫জি কানেক্টিভিটি ও উন্নত পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। 6.5 ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে, 4GB RAM, এবং 64GB স্টোরেজ একে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট করে তোলে। এটি বিশেষভাবে তাদের জন্য যাদের বাজেট সীমিত, কিন্তু তারা চান ৫জি সাপোর্ট ও আধুনিক ফিচার।

ফিচারস:

MediaTek Dimensity 6020 প্রসেসর

6.5" HD+ ডিসপ্লে

4GB RAM + 64GB স্টোরেজ

13MP রিয়ার + 8MP ফ্রন্ট ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

8. Motorola G04 মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১১,৪৯০ টাকা

Motorola G04 এমন একটি ফোন যেটি ব্র্যান্ডের দিক থেকে নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য। Motorola তাদের সফটওয়্যার আপডেট এবং ক্লিন ইউজার ইন্টারফেসের জন্য পরিচিত। এই ফোনে রয়েছে Unisoc T606 চিপসেট, 4GB RAM, এবং 64GB স্টোরেজ, যা দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য যথেষ্ট পারফরম্যান্স প্রদান করে। 6.56 ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে এবং 90Hz রিফ্রেশ রেট ভিডিও দেখা এবং স্ক্রলিংকে করে তোলে আরও স্মুথ। 16MP রিয়ার ক্যামেরা ছবি তুলতেও অনেকটাই ভালো। যারা ব্র্যান্ডেড ও নির্ভরযোগ্য স্মার্টফোন খুঁজছেন এই বাজেটে, তাদের জন্য এটি সেরা চয়েস।

ফিচারস:

6.56” HD+ ডিসপ্লে (90Hz)

Unisoc T606 প্রসেসর

4GB RAM + 64GB স্টোরেজ

16MP রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

9. Realme C30s মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳৯,৯৯০ টাকা

Realme C30s হল এমন একটি ফোন যা নতুন ইউজার বা হালকা ব্যবহারকারীদের জন্য পারফেক্ট। এটি দেখতে খুবই স্লিম ও হালকা, তাই হাতে ধরে ব্যবহারে অনেকটাই আরামদায়ক লাগে। ফোনটিতে রয়েছে 6.5 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে এবং Unisoc SC9863A প্রসেসর, যা ফেসবুক, মেসেঞ্জার, ইউটিউব কিংবা সাধারণ টাস্কের জন্য যথেষ্ট। 3GB RAM এবং 32GB স্টোরেজ থাকায় আপনি হালকা অ্যাপ চালাতে পারবেন স্বাচ্ছন্দ্যে। 8MP রিয়ার ক্যামেরা এবং 5MP ফ্রন্ট ক্যামেরা দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি আপলোডের কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।

ফিচারস:

6.5" HD+ ডিসপ্লে

Unisoc SC9863A প্রসেসর

3GB RAM + 32GB ROM

8MP রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

10. Xiaomi Redmi A2+ মোবাইল

মূল্য: প্রায় ৳১০,৯৯০ টাকা

Xiaomi Redmi A2+ এমন একটি ফোন যা বাজেট ব্যবহারকারীদের জন্য তৈরি। Xiaomi তাদের পারফরম্যান্স, ব্যাটারি ও বিল্ড কোয়ালিটির জন্য অনেক আগেই পরিচিতি পেয়েছে। এই ফোনে রয়েছে MediaTek Helio G36 প্রসেসর, যা হালকা কাজগুলোতে ভালো সাপোর্ট দেয়। 6.52 ইঞ্চির HD+ ডিসপ্লে এবং 5000mAh ব্যাটারি ফোনটিকে করে তোলে দীর্ঘ সময়ের ব্যবহার উপযোগী। 3GB RAM ও 64GB স্টোরেজ থাকায় মোবাইলটি বেসিক গেমিং, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার ইত্যাদির জন্য যথেষ্ট। বাজেটে একটি ব্র্যান্ডেড, নির্ভরযোগ্য ও ব্যালান্সড ফোন খুঁজছেন এমনদের জন্য এটি ভালো একটি বিকল্প।

ফিচারস:

MediaTek Helio G36 প্রসেসর

6.52" HD+ ডিসপ্লে

3GB RAM + 64GB স্টোরেজ

8MP রিয়ার ক্যামেরা

5000mAh ব্যাটারি

ক্যামেরা কেমন পাওয়া যায় এই বাজেটে?

এই বাজেটে ক্যামেরা নিয়ে অনেকের প্রশ্ন থাকে। আপনি ৮MP থেকে শুরু করে ৫০MP পর্যন্ত ক্যামেরা যুক্ত ফোন পেতে পারেন। তবে মেগাপিক্সেল বাড়লেও ছবির কোয়ালিটি নির্ভর করে লেন্স ও সফটওয়্যারের ওপর। দিনের আলোতে এই বাজেটের ফোনগুলো ভালো ছবি তোলে, কিন্তু লো লাইটে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। কিছু ফোনে AI ক্যামেরা ও পোট্রেট মোড থাকে যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছবি আপলোডের জন্য ভালো। ভিডিও রেকর্ডিং সাধারনত 1080p পর্যন্ত হয়। যেহেতু অনেকেই মোবাইল দিয়ে ছবি ও ভিডিও তৈরি করেন, তাই ক্যামেরার বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত।

গেমিংয়ের জন্য এই বাজেটের ফোন কেমন?

গেমারদের জন্য ১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল নির্বাচন করা একটু চ্যালেঞ্জিং হলেও অসম্ভব নয়। আপনি যদি PUBG Mobile বা Call of Duty-এর মতো হেভি গেম খেলতে চান, তাহলে Helio G88 বা Dimensity 6000 সিরিজের চিপসেট দেখতে হবে। তবে Free Fire, Temple Run, অথবা Subway Surfers-এর মতো হালকা গেম খেলতে চাইলে Redmi A3 বা Symphony Z60 Plus যথেষ্ট। কিছু ফোনে ৬GB RAM পর্যন্ত পাওয়া যায় যা মাল্টিটাস্কিং ও গেমিং এক্সপেরিয়েন্সে সহায়ক। গেমিংয়ের সময় ফোন গরম হওয়া, ল্যাগ বা স্টাটার না হওয়ার বিষয়েও খেয়াল রাখুন।

ব্যাটারি ও চার্জিং পারফরমেন্স

একটি স্মার্টফোনের ব্যাটারি ব্যাকআপ ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাকে অনেকটাই প্রভাবিত করে। এই বাজেটের ফোনগুলোতে সাধারণত ৫০০০ mAh ব্যাটারি থাকে যা নরমাল ব্যবহারে ১ থেকে ১.৫ দিন চলে। যদি আপনি দিনে কয়েক ঘণ্টা সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেন, কিছু ভিডিও দেখেন এবং মাঝে মাঝে কল করেন – তাহলে এই ব্যাটারি যথেষ্ট হবে। চার্জিং সিস্টেমের দিক থেকেও উন্নতি হয়েছে। বর্তমানে অনেক ফোনে ১৮W ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট থাকে, যা ১ ঘণ্টার মধ্যেই ফোন চার্জ করে ফেলে। তাই চার্জিং টাইম ও ব্যাকআপ একসাথে বিবেচনা করে ফোন বেছে নিন।

ব্র্যান্ডের মধ্যে কোনটি ভালো?

বাজেট ফোন কিনতে গেলে অনেকেই দ্বিধায় পড়েন – কোন ব্র্যান্ডের ফোন নেবেন? বাংলাদেশে এই বাজেটের মধ্যে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলো হলো Symphony, itel, Infinix, Xiaomi (Redmi), Realme এবং Walton। এগুলোর মধ্যে Xiaomi এবং Realme কিছুটা বেশি নির্ভরযোগ্য, তবে Symphony এবং itel-এরও কিছু মডেল খুব ভালো পারফরমেন্স দেয়। ফোন কেনার আগে অবশ্যই ইউজার রিভিউ ও সার্ভিস সেন্টারের সুবিধা দেখে নিন। অফিশিয়াল ফোন নিলে ওয়ারেন্টি ও আফটার সেলস সার্ভিস পাওয়া যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে সহায়ক হয়।

সফটওয়্যার ও আপডেট

বাজেট ফোনে সফটওয়্যার ও অপারেটিং সিস্টেমের গুরুত্ব অনেক বেশি। বেশিরভাগ বাজেট ফোনে Android Go Edition দেয়া থাকে, যা হালকা ভার্সনের অ্যাপ চালাতে উপযোগী। এতে ব্যাটারির সাশ্রয় হয় এবং পারফরমেন্স মসৃণ থাকে। তবে অনেক সময় দেখা যায় এসব ফোনে সফটওয়্যার আপডেট আসে না, ফলে নিরাপত্তা ও পারফরমেন্স সমস্যা হতে পারে। তাই ফোন কেনার আগে জেনে নিন – আপডেট দেয় কি না এবং UI (User Interface) কতটা ইউজার ফ্রেন্ডলি। সফটওয়্যারের কারণে অনেক সময় ভালো স্পেসিফিকেশন থাকা সত্ত্বেও ফোন স্লো হয়ে যায়।

কোথা থেকে কিনলে ভালো হবে?

অনেকেই ভাবেন, মোবাইল অনলাইনে কিনলে কি নিরাপদ? উত্তর হলো – যদি আপনি বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে কেনেন তাহলে নিশ্চিন্তে নিতে পারেন। যেমন: Daraz, Pickaboo, এবং Aponhut। এইসব প্ল্যাটফর্মে অফিশিয়াল ওয়ারেন্টি সহ ফোন পাওয়া যায়। তাছাড়া ডিসকাউন্ট, EMI সুবিধা ও ক্যাশ অন ডেলিভারি অনেক সময় পাওয়া যায়। তবে লোকাল শপ থেকে কিনলে অবশ্যই বিল ও ওয়ারেন্টি চেক করুন। এছাড়াও শপিং মলে কিছু ফেক ফোন থাকে, সেক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে কিনতে হবে।

১২০০০ টাকার মধ্যে মোবাইল – আমার চূড়ান্ত পরামর্শ

সবশেষে আমি বলবো – আপনি যদি নির্দিষ্ট কাজের জন্য ফোন খুঁজে থাকেন, তবে খুব সহজেই এই বাজেটের মধ্যে একটি ভালো স্মার্টফোন পেয়ে যাবেন। যেকোনো ফোন কেনার আগে Always চেক করুন: RAM, ডিসপ্লে, প্রসেসর, ব্যাটারি এবং ক্যামেরা। আবার কেউ যদি প্রো গেমার হতে চায়, তাহলে একটু বেশি বাজেট রাখা ভালো। তবে ছাত্রছাত্রী, চাকরিজীবী কিংবা সিনিয়র সিটিজেনদের জন্য ১২০০০ টাকার মধ্যে ফোন একেবারেই পারফেক্ট। Aponhut সব সময় চেষ্টা করে এই বাজেটে সেরা ডিভাইস গুলো আপনাদের সামনে তুলে ধরতে।

প্রায়শই জিজ্ঞাসিত প্রশ্নাবলী (FAQs)


১. ১২০০০ টাকায় ভালো ব্র্যান্ডের ফোন পাওয়া যায়?

হ্যাঁ, Xiaomi, Symphony, Infinix, এবং itel এর মতো জনপ্রিয় ব্র্যান্ডের ফোন আপনি এই দামে পেতে পারেন। তবে অফিশিয়াল ফোন কিনলে ভালো সার্ভিস ও ওয়ারেন্টি পাওয়া যায়।

২. এই বাজেটে ফোন কতদিন ব্যবহার করা যায়?

সাধারণভাবে, এই দামের ফোন আপনি ২-৩ বছর পর্যন্ত ব্যবহার করতে পারবেন, যদি আপনি খুব হেভি ইউজার না হন। তবে কভার ও স্ক্রিন প্রটেক্টর ব্যবহার করলে ফোনটি দীর্ঘস্থায়ী হয়।

৩. এই দামে 5G ফোন পাওয়া সম্ভব?

হ্যাঁ, যেমন itel P55 5G ফোনটি মাত্র ১২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায় এবং এটি 5G সাপোর্ট করে। তবে 5G সুবিধা পেতে হলে আপনার এলাকায় নেটওয়ার্ক থাকতে হবে।

৪. কীভাবে বুঝব কোন ফোনটি সেরা হবে?

আপনার ব্যবহারের ধরণ বুঝে সিদ্ধান্ত নিন। যারা বেশি ভিডিও দেখেন, তাদের জন্য ভালো ডিসপ্লে দরকার। গেমারদের জন্য ভালো প্রসেসর, আর ফটোগ্রাফারদের জন্য ভালো ক্যামেরা।

৫. অনলাইন থেকে কিনলে নিরাপদ কি?

বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট থেকে কিনলে নিরাপদ। Daraz, Aponhut, বা অফিশিয়াল ব্র্যান্ড শপে ওয়ারেন্টি সহ কেনা ভালো। ক্যাশ অন ডেলিভারি ও রিভিউ পড়ে অর্ডার করলে ঝুঁকি কম থাকে।